নিজস্ব চিত্র।
এক দলিত কিশোরীর নগ্ন ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল মাসখানেক আগে। এ বার তাঁর মায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ধূপগুড়িতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় খলাইগ্ৰাম এলাকায় ওই কিশোরীর বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে এক পুকুরপাড়ে উদ্ধার হয়েছে তার মায়ের দেহ। মৃতার নাম কবিতা বাসফোর (৪১)। এই ঘটনায় স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী।
মদ খাইয়ে কিশোরীকে নগ্ন করে ভিডিয়ো তুলে সেই ভিডিয়ো ভাইরাল করার অভিযোগ উঠেছিল জলপাইগুড়ির গাদং ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য প্রতিমা সরকারের স্বামী পার্থ সরকারের বিরুদ্ধে। গত ১৮ জুনের ঘটনা। ধূপগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর ওই প়ঞ্চায়েত সদস্যকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তিন দিন পর গ্রেফতায় হয় মূল অভিযুক্ত পার্থ। ওই ঘটনার পরই প্রতিমাকে দল থেকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। সম্প্রতি জামিনও পেয়েছিলেন তিনি। তার পরই এই কিশোরীর মায়ের দেহ উদ্ধার! স্বাভাবিক ভাবেই ওই মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, খুন করা হয়ে থাকতে পারে তাঁকে। স্থানীয় বাসিন্দা জয়নাল আবেদুল ইসলাম বলেন, ‘‘কিছু দিন আগেই পঞ্চায়েত সদস্য জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তাঁর স্বামী এখনও জেলে। এরই মধ্যে ওই কিশোরীর মায়ের মৃত্যু! অন্য চক্রান্ত থাকতে পারে।’’
মৃতার স্বামী প্রদীপ বাসফোর বলেন, ‘‘হোমে মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন আমার স্ত্রী। আর বাড়ি ফেরেননি। কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। বুধবার বিকেলে পুকুরপাড়ে তাঁকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়েরা। আমি বুঝে উঠতে পারছি না, কী করে ওঁর মৃত্যু হল।’’
‘নর্থ বেঙ্গল বাসফোর অ্যান্ড হরিজন ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন’-এর সম্পাদক সুরেন্দ্র রাউত বলেন, ‘‘আমরা মেয়েটির পাশে আছি। আমাদের সম্প্রদায়ের একটি নাবালিকা মেয়েকে সমাজে অসম্মানিত করা হয়েছে। নাবালিকার নগ্ন ভিডিয়ো ভাইরালের ঘটনার পর তাঁর মায়ের মৃত্যু আরও বেশি চিন্তায় ফেলেছে আমাদের। ধূপগুড়ি থানায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছি আমরা।’’
ওই কিশোরীর মায়ের মৃত্যু প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, ‘‘কেউ কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা হিসেবে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।’’