Dengue

রাতে ৯ ডিগ্রিতেও ডেঙ্গি

দার্জিলিং জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘শীতেও ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের কাজ চলবে। নতুন বছরেও শুরু থেকে বাড়ি বাড়ি ডেঙ্গি ও জ্বরের সমীক্ষা করানো এবং রোগ প্রতিরোধের কাজে নামা হবে।’’

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৩৬
Share:

প্রতিরোধ: শীতকালেও রয়েছে ডেঙ্গির ভয়। ছড়ানো হচ্ছে ধোঁয়া। শিলিগুড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

ঠান্ডাতেও ডেঙ্গির প্রকোপ নিয়ে চিন্তা বেড়েছে শিলিগুড়ি পুরসভা ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের। নিয়ম মাফিক নভেম্বরে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষার কাজ শেষ হয়। এ বছর পরিস্থিতির জেরে ডিসেম্বরেও বিশেষ সমীক্ষা করানো হচ্ছে। ডেঙ্গি এবং জ্বরের কী পরিস্থিতি, বাড়ি বাড়ি ঘুরে সমীক্ষাদলের সদস্যরা সেই তথ্য সংগ্রহ করছেন। সেই সঙ্গে শুকনো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা পাত্র যেগুলোতে কয়েক মাস আগে জল জমে থাকত, তা নষ্ট করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ শুকনো অবস্থাতেও ডেঙ্গি আক্রান্ত এডিসের ডিম দু’বছর ঠিক থাকে। জল ও উপযুক্ত পরিবেশ, তাপমাত্রা পেলে বিশেষ করে আগামী বর্ষায় ওই ডিম থেকে ফের ডেঙ্গির জীবাণু বাহক মশা জন্মান্তে পারে। কেননা, যে এডিস মশা ডেঙ্গির জীবাণু বহন করছে তার ডিম থেকে যত মশা জন্মাবে সবগুলোই ডেঙ্গির জীবাণু বহন করবে। রোগের প্রকোপ বাড়াবে।

Advertisement

দার্জিলিং জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘শীতেও ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের কাজ চলবে। নতুন বছরেও শুরু থেকে বাড়ি বাড়ি ডেঙ্গি ও জ্বরের সমীক্ষা করানো এবং রোগ প্রতিরোধের কাজে নামা হবে।’’ পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ শঙ্কর ঘোষ জানান, স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে পরিকল্পনা মাফিক তাঁরাও বছরের শুরু থেকে রোগ প্রতিরোধের কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

গত বছর পুজোর পরেই কমে গিয়েছিল ডেঙ্গি। নভেম্বরে তেমন প্রকোপ ছিল না। এ বছর নভেম্বরে ডেঙ্গির প্রকোপ মারাত্মক। আক্রান্তের সংখ্যা সাতশোর মতো। ডিসেম্বরের প্রথম দুই সপ্তাহে শহরের অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। ডিসেম্বরে প্রথম সপ্তাহে ৫২ জন এবং দ্বিতীয় সপ্তাহে ৫৩ জনের মতো আক্রান্ত হয়েছেন। গত কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রার পারদ অনেকটাই নেমেছে। সর্বনিম্ন ৯ ডিগ্রিও হচ্ছে। রোদ উঠলে দিনে ১৯-২০ ডিগ্রি থাকছে। তার মধ্যেও এই কয়েক দিনে শহরে ৮ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। সব মিলিয়ে এ বছর আক্রান্তের সংখ্যা উনিশশোর কাছাকাছি। অভিযোগ, ডেঙ্গিতে মারাও গিয়েছেন অন্তত ছয় জন।

Advertisement

গত কয়েক দিন ধরেই তাপমাত্রার পারদ নীচে নামতে থাকায় ডেঙ্গি এবার কমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্য দফতরকে চিন্তায় ফেলেছে দুটো কারণ। এক, গত কয়েক বছর ধরে ডেঙ্গির প্রকোপ চলছে। এ বছর ডিসেম্বরে এখনও শতাধিক আক্রান্ত হয়েছেন। এখনও কয়েক জন ডেঙ্গি রোগী নার্সিংহোমগুলোতে রয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতরের পর্যবেক্ষণ এডিস এলবোপিক্টাস প্রজাতির মশা শহর অঞ্চলে বেড়েছে। এই প্রজাতির মশা প্রবল শীত না পড়লে অল্প শীতেও বেঁচে থাকে এবং জীবনচক্র সম্পন্ন করে। সে জন্য পরিস্থিতি কী তা খতিয়ে দেখতে ডিসেম্বরে দুই দফায় সমীক্ষা করানো হচ্ছে। ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সমীক্ষা চলবে। তা ছাড়া যা পরিস্থিতি তাতে আগামী বছরে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা এখনই শুরু না করলে বিপজ্জনক হতে পারে। উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের নোডাল অফিসার তুলসি প্রমাণিক জানান, এ বার শীতেও সমীক্ষা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement