আক্রান্ত: চিকিৎসাধীন দীপ্তি। নিজস্ব চিত্র
গত শনিবার জ্বরে আক্রান্ত হন রায়গঞ্জের দাওতপুর এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ দীপ্তি সরকার। স্থানীয় এক চিকিৎসকের পরামর্শে দু’দিন ওষুধ খেয়েও তাঁর জ্বর কমেনি। সোমবার তাঁকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করান পরিবারের লোকেরা। শুক্রবার হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে দীপ্তি বলেন, ‘‘বুধবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার রক্তপরীক্ষা করেছেন। বৃহস্পতিবার সেই পরীক্ষার রিপোর্ট এসেছে। নার্সরা জানিয়েছেন আমার ডেঙ্গি হয়েছে। তারপরেই নার্সরা আমার শয্যায় মশারি টাঙিয়ে দেন।’’
রায়গঞ্জের খলসি এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধা আমদি সরকার এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে জ্বরে ভুগছেন। মঙ্গলবার তাঁকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করান পরিবারের লোকেরা। আমদির ছেলে শরতের বক্তব্য, ‘‘বৃহস্পতিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মায়ের রক্তপরীক্ষা করেছেন। শুক্রবার নার্সরা সেই রিপোর্ট দেখে মায়ের ডেঙ্গি হয়েছে বলে জানান।’’
কালিয়াগঞ্জের কুনোর এলাকার বাসিন্দা সুদীপ রায় মঙ্গলবার জ্বরে আক্রান্ত হন। বৃহস্পতিবার তাঁকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবারের লোকেরা। শুক্রবার সকালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর রক্তপরীক্ষা করেন। সুদীপের দাবি, এদিন দুপুরে চিকিৎসক সেই পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে তাঁর ডেঙ্গি হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত দুদিনে দীপ্তি, আমদি ও সুদীপের ছাড়া জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আর কোনও রোগীর শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েনি। তবে গত তিন মাসে এই নিয়ে হাসপাতালে প্রায় ৬৫ জন রোগীর শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে। বর্তমানে হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ড মিলিয়ে সাত জন মহিলা সহ মোট ২৭ জন রোগী জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ২০ জন রোগীর রক্তপরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবাণু মেলেনি। বাকি সাত জন রোগীর রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও আসেনি।
উত্তর দিনাজপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন মাসে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে ২৫ জন রোগীর শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। সব মিলিয়ে গত ১ অগাস্ট থেকে শুক্রবার পর্যন্ত জেলার নয়টি ব্লক মিলিয়ে ৯০ জন বাসিন্দা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন।
জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-২ দেবাশিস মণ্ডলের বক্তব্য, জেলায় এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গিতে কারও মৃত্যু হয়নি। ডেঙ্গি প্রতিরোধে কাজ করছেন তাঁরা।