Drugs At Cooch Behar

তুঙ্গে চাহিদা, ‘ইয়াবা’ ঢুকছে কোচবিহারে

সূত্রের দাবি, পুলিশ শুধু নয়, রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স, বিএসএফের চোখ ‘এড়িয়ে’ চলছে ওই কারবার। অভিযোগ, ওই কারবারের পিছনে রয়েছে বড়-বড় মাথা।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:০২
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

সন্ধ্যা হলে অনেক জায়গায় আসর বসে নেশার। কোথাও গাঁজা, কোথাও মদ। যত্র-তত্র পড়ে থাকতে দেখা যায় নিষিদ্ধ কাশির সিরাপের বোতল। তেমন আসরে এ বার নতুন সংযোজন ‘ইয়া বা ট্যাবলেট’ (মিথাঅ্যাম্ফিটামাইন এবং ক্যাফিন)। সূত্রের দাবি, চিন-মায়ানমার থেকে জঙ্গলের চোরা-পথ পেরিয়ে সে ‘ট্যাবলেট’ উত্তর-পূর্ব ভারত হয়ে ঢুকে পড়ছে কোচবিহারে। তার পরে, নির্দিষ্ট জায়গায় তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। সেখান থেকে মাদক বিক্রির ‘এজেন্টের’ কাছে পৌঁছে যাচ্ছে ট্যাবলেট। নানা হাত ঘুরে গ্রাহকের হাতে পৌঁছে যাচ্ছে ওই নেশা-দ্রব্য। চোরা বাজারে একটি করে ট্যাবলেট ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি করা হয়। পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত দু’বছরের মধ্যে ওই নেশা-দ্রব্যের চাহিদা রমরম করে বেড়েছে কোচবিহারে। বিশেষ করে বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় এর চাহিদা বেশি। কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমাদের নজরদারি রয়েছে। নানা সময় ট্যাবলেট উদ্ধার করাও হয়েছে।’’

Advertisement

সূত্রের দাবি, পুলিশ শুধু নয়, রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স, বিএসএফের চোখ ‘এড়িয়ে’ চলছে ওই কারবার। অভিযোগ, ওই কারবারের পিছনে রয়েছে বড়-বড় মাথা। যারা বেশির ভাগ সময়েই থাকে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। যাদের গ্রেফতার করা হয়, তারা মূল ট্যাবলেট এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য ‘বাহক’ হিসাবে কাজ করে মাত্র।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সেনাদের ক্লান্তি কাটিয়ে উদ্যম ফিরিয়ে আনতে কিছু কিছু দেশ ওই ওষুধ ব্যবহার করত। একে ‘ক্রেজ়ি ড্রাগ’ ও বলা হয়। চিকিৎসকদের মতে, এর দীর্ঘমেয়াদি ফল অত্যন্ত খারাপ। শরীরের পাশাপাশি, মনের উপরেও প্রভাব পড়ে ওযুধের। ওই ট্যাবলেট-আসক্তদের মানসিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। বর্তমানে ইয়াবা সব থেকে বেশি উৎপাদন হয় মায়ানমারে। তার পরেই চিন।

Advertisement

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রের দাবি, মায়ানমার ও চিন থেকে সীমান্ত পেরিয়ে এপারে চলে আসে ‘ইয়া বা’। চিন থেকে প্রথমে ট্যাবলেট পৌঁছে দেওয়া হয় নেপাল, ভুটানে। সেখান থেকে সড়ক পথে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। আর মায়ানমার থেকে ওই ট্যাবলেট পৌঁছয় উত্তর-পূর্ব ভারতের অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুরের মতো জায়গায়। সেখান থেকে অসম হয়ে, তা কোচবিহারে পৌঁছয়। ওই ট্যাবলেট পাচারকারীরা সাধারণত সড়ক পথকেই বেছে নেয়। গোয়েন্দাদের থেকেই জানা গিয়েছে, মায়ানমারের সীমান্তের অনেকটা অংশ জঙ্গল-পথ। সীমান্ত পেরিয়ে অনেক সময়েই সে সব জঙ্গলে ঘাঁটি বানায় জঙ্গি গোষ্ঠী। তাদের একটি অংশ ওই কারবারের সঙ্গে জড়িত বলে মনে করা হয়। গত দু’বছরে কোচবিহারে কয়েক কোটি টাকার ‘ইয়া বা’ ট্যাবলেট উদ্ধার হয়েছে। বৃহস্পতিবার রেলগুমটিতে ট্রাকে তল্লাশি চালিয়ে চার কেজি ‘ইয়া বা’ ট্যাবলেট এবং ব্রাউন সুগার উদ্ধার হয়। যার বাজারমূল্য কোটি টাকার উপরে। (তথ্য সূত্র: জেলা পুলিশ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement