ছোগেল মোক্তান তামাং
রাস্তায় বিছানো ধান আর বালুরঘাট সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের চিকিৎসা— সড়ক দুর্ঘটনায় দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের বিডিও ছোগেল মোক্তান তামাংয়ের (৪০) মৃত্যুর জন্য ওই দুইকেই দায়ী করছেন জেলাবাসীর অনেকে। সিসিইউতে ভর্তি করে টানা চার ঘণ্টা চিকিৎসার পরেও কেন ‘রেফার’ করতে হল, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, আত্মীয়রাই তাঁকে শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ‘রেফার’ করতে বলেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রণব ঘোষ বলেন, ‘‘চিকিৎসকেরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। তবে সব ব্যবস্থা হাসপাতালে নেই।’’
বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে সড়ক দুর্ঘটনায় জখমদের সুষ্ঠু চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ করেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘বিডিওর মৃত্যুতে হাসপাতালের চিকিৎসার দুরবস্থা সামনে এল। উত্তরবঙ্গের কোনও হাসপাতাল, এমনকি শিলিগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক জনও নিউরোসার্জন নেই।’’ তাঁর দাবি, অবিলম্বে রাজ্য সরকারকে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উন্নীত করার প্রস্তাব পাঠাতে হবে।
তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ অর্পিতা ঘোষ বলেন, ‘‘বালুরঘাটে শল্য চিকিৎসা ব্যবস্থা ভাল। হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার ইউনিট চালুর চেষ্টা করছি।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার দুপুর ১টা নাগাদ তপন ব্লকের আমতলি এলাকায় নাকা চেকিং পরিদর্শন করে বিডিও ব্লক সদরে ফিরছিলেন। করদহ এলাকায় রাজ্য সড়কে তাঁর গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে একটি গাছে ধাক্কা মেরে নয়ানজুলিতে উল্টে যায়। ওই রাস্তায় ধান শুকোতে দেওয়া হয়েছিল। তাতেই গাড়ির চাকা পিছলে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। পুলিশ গুরুতর জখম বিডিও এবং তাঁর গাড়ির চালককে উদ্ধার করে দুপুর ২টোয় বালুরঘাট জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করে। বিকেল ৬টা নাগাদ তাঁকে শিলিগুড়িতে রেফার করা হয়। রাতে শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ইসলামপুরের কাছে অ্যাম্বুল্যান্সেই প্রাণ হারান বিডিও। দার্জিলিঙের বাসিন্দা অবিবাহিত ছোগেল ৬ মাস আগে তপনের বিডিও হয়ে কাজে যোগ দেন। তপনই তাঁর প্রথম পোস্টিং ছিল বলে জানান জেলাশাসক নিখিল নির্মল।