এই বহুতল থেকেই উদ্ধার হয় নার্সের দেহ। —নিজস্ব চিত্র।
শিলিগুড়ির একটি বহুতল থেকে উদ্ধার হল এক নার্সের ঝুলন্ত দেহ। মৃত নার্সের নাম অর্চনা থাপা (২৫)। তাঁর পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা দার্জিলিং থেকে রওনা দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এটি আত্মহত্যা না কি খুন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে শিলিগুড়ির ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের মিলনপল্লির মুকুন্দ দাস সরণির একটি বহুতল থেকে অর্চনার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। দার্জিলিঙের বাসিন্দা অর্চনা শিলিগুড়িতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নার্স হিসাবে কর্মরত ছিলেন। এই বহুতল ঘিরে বহু দিন ধরেই এলাকাবাসীর নানাবিধ অভিযোগ। স্থানীয়দের অভিযোগ, শিলিগুড়ির বর্ধমান রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালের নার্স-সহ বিভিন্ন কর্মীরা এই বহুতলে থাকেন। কিন্তু গভীর রাত পর্যন্ত এখানে অচেনা মানুষের যাতায়াত চলে। তাঁদের বক্তব্য, শুক্রবার সন্ধ্যার পর এই বহুতল থেকে ২০ থেকে ২৫ জন নার্স দৌড়ে বেরিয়ে যান। তার পর বেশ কিছু ছেলে আসে। মুহূর্তের মধ্যে বেসরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্সও দেহ নিতে চলে আসে। এর পরেই এলাকাবাসীরা বিক্ষোভ দেখান। এলাকার কাউন্সিলর জয়ন্ত সাহাকে খবর দেওয়া হলে তিনিই পুলিশকে জানান। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে বহুতলে ঢুকে শৌচাগার থেকে ওই নার্সের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে। চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। এলাকাবাসী ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
কাউন্সিলর জয়ন্ত পরে বলেন, “আজ এলাকাবাসীর জন্য এই ধরনের একটি ঘটনাকে রোখা গেল। তাঁরা প্রতিবাদ না করলে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ সকলের অগোচরে মৃতদেহ নামিয়ে নিয়ে চলে যেতেন। তার পর এটা আত্মহত্যা না অন্য কিছু তার প্রমাণ পাওয়া যেত না। এ সব ঘটনার ক্ষেত্রে পুলিশের উপস্থিতি আবশ্যক। কিন্তু সেটা না করে তাঁরা অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে এসে মৃতদেহ কেন নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন? এর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।”
এলাকাবাসী পিঙ্কু দত্ত বলেন, “এত বড় একটা বহুতল। কোন সিসিটিভি নেই। রেজিস্টার নেই। নানা সময়ে নানা রকম বেনিয়মের অভিযোগ। আমরা এলাকাবাসী পুলিশের সঙ্গে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করেছি। মহিলার শরীরে কালসিটের দাগ রয়েছে। কী ভাবে মৃত্যু হল তা তদন্ত করা উচিত।”
স্থানীয় বাসিন্দা দেবাশিস দে বলেন, “এখানে প্রতি দিন রাতভর নানা ধরনের ব্যক্তির যাতায়াত। আজকে বহুতল থেকে আবাসিকদের সকলকে যখন সরিয়ে দেওয়া হয় তখন এলাকাবাসী প্রশ্ন করলে তাঁদের ভুল বোঝানো হয়। স্থানীয়েরা যখন তাঁদের আটকে দেয় তখন তাঁরা এখান থেকে পালিয়ে যান। সেই কারণেই আমাদের বিরোধিতা।”