Darjeeling

স্থায়ী সমাধান হোক পাহাড়ে, চান নীরজরা

শৈলশহরের রাজনৈতিক নেতারা বলছেন, নেপালের সঙ্গে অস্থিরতা তৈরি হলে তার প্রভাব পাহাড়ে পড়ার যথেষ্ট আশঙ্কা।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২০ ০২:২৯
Share:

ফাইল চিত্র

সিকিম সীমান্তে যদি চিনের সঙ্গে গোলমালের ছায়া পড়ে থাকে, দার্জিলিং জেলা তা হলে নেপালের সঙ্গে মতভেদের ছায়া পড়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। এই পড়শি দেশও এর মধ্যে নিজেদের মানচিত্রে ভারতের অংশ যুক্ত করে তা সংসদে পাশ করিয়েছে। ফলে দু’দেশের সম্পর্ক তপ্ত হওয়ার পরিবেশ তৈরি। এই পরিস্থিতিতে নেপালের সঙ্গে যে জায়গার ঘনিষ্ঠতা সব থেকে বেশি, সেই দার্জিলিং কী ভাবছে?

Advertisement

শৈলশহরের রাজনৈতিক নেতারা বলছেন, নেপালের সঙ্গে অস্থিরতা তৈরি হলে তার প্রভাব পাহাড়ে পড়ার যথেষ্ট আশঙ্কা। এখনও দার্জিলিঙে এমন অনেকে আছেন, যাঁদের নেপালের সঙ্গে নিত্য যোগাযোগ রয়েছে। তাই দার্জিলিঙে দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের কথাও বলেছেন বিধায়ক নীরজ জিম্বার মতো কেউ কেউ। তাঁদের বক্তব্য, তা হলে নেপালকে জবাব দেওয়া সম্ভব হবে।

ঐতিহাসিক ভাবে নেপাল ও দার্জিলিঙের মধ্যে যোগ রয়েছে। ১৮১৫ সালে নেপালের কাছ থেকেই ব্রিটিশের হাতে আসে দার্জিলিং এবং তা ইংরেজশাসিত ভারতের অন্তর্গত হয়। এখনও দু’দেশের সীমান্তে বেশির ভাগ জায়গায় কাঁটাতার নেই। ভিসা ছাড়াই দু’পারের মধ্যে অবাধ যাতায়াত চালু রয়েছে। নেপালের বহু মানুষ জীবিকার জন্য ভারতের উপর নির্ভরশীল, অনেকে দার্জিলিঙে আসেন। তেনজিং নোরগেও চলে এসেছিলেন।

Advertisement

পাহাড়ের অনেকেই বলছেন, আলফা, কেএলও-দের নিরাপদ ঘাঁটি থেকে নেপালি মাওবাদীদের কার্মকাণ্ড— সব ক্ষেত্রেই নেপালের ছায়া পড়েছে দার্জিলিঙে। একসময় এক নেপালি মাওবাদী শীর্ষ নেতা গ্রেফতার হন দার্জিলিং জেলা থেকেই। আবার আলাদা রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনে নামা পাহাড়ের অনেক নেতাই নেপালে লুকিয়ে ছিলেন বলে অভিযোগ। ২০১৭ সালে রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পরে বিমল গুরুং পাহাড় ডিঙিয়ে পড়শি রাজ্য হয়ে নেপালে পালিয়েছিলেন বলেও তখন পুলিশ দাবি করেছিল। বিজেপির সহযোগী গুরুং এখন উত্তর ভারতের কোথাও আত্মগোপন করে আছেন বলে গোয়েন্দাদের একাংশের দাবি। মাঝে মাঝে তাঁর অডিয়ো, ভিডিয়ো বার্তা সামনে আসে। তিনি নিজেও সশরীর প্রকাশ্যে আসেন।

নেপাল-ভারত গোলমালের আঁচ যেন না আর পাহাড়ে না লাগে— এই ব্যাপারে একমত শাসক থেকে বিরোধী সব দলের নেতারাই। মোর্চা নেতা বিনয় তামাংয়ের কথায়, ‘‘দার্জিলিং, কালিম্পং বা শিলিগুড়ির ভৌগোলিক অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি হওয়ায় পাহাড়ের সঙ্গে নেপালের সম্পর্ক বেশি। কেন্দ্রকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। আমরা শান্তির পক্ষে।’’

তৃণমূলের দার্জিলিং পাহাড়ের নেতা বিন্নি শর্মা মনে করেছেন, ‘‘কোনও গোলমাল হলে পাহাড়ে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য।’’ তিনি বলেন, ‘‘প্রতিবেশী নেপালিদের সঙ্গে আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু গরম বাড়লে তো তাতেও চিড় ধরতে পারে। কেন্দ্রকে আরও সতর্ক, সচেতন হয়ে থাকা দরকার।’’

এখনই পাহাড় সমস্যারস্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান প্রয়োজন বলে মনে করেন দার্জিলিঙের বিজেপি বিধায়ক নীরজ জিম্বা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কেন্দ্রকে দ্রুত সমাধানের কথা বলছি। এটা হলে নেপালকে উপযুক্ত জবাব দেওয়া যাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement