বিনয় তামাং। -ফাইল চিত্র।
দার্জিলিং পুরসভাকে এ বার কর্পোরেশন বা পুরনিগম করার দাবি তুললেন খোদ মোর্চা সভাপতি বিনয় তামাং। সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে দার্জিলিং মহকুমার ভিশন কমিটির বিশিষ্ট লোকজনের সঙ্গে বৈঠক করেন বিনয়। দার্জিলিংকে সাজাতে কী কী করা হবে তা আলোচনা হয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম দার্জিলিং কর্পোরেশনের দাবি। বিভিন্ন স্তরের বাসিন্দাকে রেখে ওই দিনই বিনয়ের নেতৃত্বে ‘দার্জিলিং কর্পোরেশন ডিমান্ড কমিটি’ তৈরি করা হয়। ৬ সেপ্টেম্বর দার্জিলিং শহরে আবার বৈঠক করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি তৈরির পর দাবিপত্র নিয়ে রাজ্য সরকারের দ্বারস্থ হওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে। বিনয়ের দাবি, শৈলশহরে সারা বিশ্বের লোক আসে। উন্নত ও আধুনিক পরিকাঠামোর জন্য কর্পোরেশন প্রয়োজন।
মোর্চা নেতাদের একাংশ জানাচ্ছে, দার্জিলিং পুরসভার বয়স ১৭০ বছর। ১৮৫০ সালে ব্রিটিশরা এক জেলাশাসক স্তরের আধিকারিকের মাধ্যমে নাগরিক পরিষেবার জন্য পুরসভা তৈরি করে। এখন করোনার জন্য বন্ধ থাকলেও সাধারণত পর্যটন, স্কুল-কলেজে, গবেষণার কাজে সারা বছরই বিদেশিরা শৈলশহরে আসেন। ম্যাল-চৌরাস্তা থেকে পার্কিং, ভানুভবন থেকে মোটরস্ট্যান্ড পাহাড়ের পরিকাঠামোর কাজ অল্পবিস্তর চলছে। এর বাইরে পানীয় জল, নিকাশি, আর্বজনা সাফাই, পথবাতি, সৌন্দর্য্যায়নের কাজ হলেও তা ঠিকমতো হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
বছরের শুরুতেই এক দফায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দার্জিলিং শহরের পরিকাঠামো, পরিচ্ছন্নতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। জেলা প্রশাসন, জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা এবং বিনয় তামাংদের তা নিয়ে নির্দেশ দেন। সেইমতো দু’বেলা রাস্তা সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। বিনয়েরা মনে করছেন, পুরসভা থেকে কর্পোরেশন হলে কেন্দ্র-রাজ্যের আর্থিক সাহায্য এবং প্রকল্প পাহাড়ে বেশি আসবে। তাতে দার্জিলিঙের পরিকাঠামো বাড়াতে সুবিধা হবে।
৩২ ওয়ার্ডের দার্জিলিং পুরসভার মাথায় বর্তমানে প্রশাসক বোর্ড রয়েছে। একজন অতিরিক্ত জেলাশাসক এই পদটি সামলান। ১১ বর্গ কিলোমিটারে শহরের জনসংখ্যা ১ লক্ষ ৩২ হাজারের মত। এই এলাকা নিয়ে কর্পোরেশন করা সম্ভব কি না তা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। মোর্চা নেতাদের যুক্তি, শিলিগুড়ির ওয়ার্ড সংখ্যা মাত্র ৪৭টি। জনসংখ্যা পাহাড়ে কম হলেও শহরের গুরুত্ব বিবেচনা করে রাজ্য সরকার কর্পোরেশনের মর্যাদা দিতেই পারে।
পাহাড়ে বিনয়, অনীতের বিরোধীদের দাবি, সব কিছুই হচ্ছে আগামী বিধানসভা ভোট মাথায় রেখেই। দলের একটি সূত্রের খবর, উন্নয়ন দিয়েই মন জয় করতে নেমেছেন বিনয়, অনীতেরা। দার্জিলিং কেন্দ্রে বিধানসভা ভোটে হেরেও ফিরে আসার লড়াই শুরু করেছেন তাঁরা।