এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
তার অপরাধের জাল বিস্তৃত ছিল বিদেশে। যদিও পুলিশ সূত্রের দাবি, অপরাধের শুরু হয়েছিল শিলিগুড়ি থেকে। ২৫০ কোটি টাকার সাইবার প্রতারণার মামলায় গ্রেফতার অভিষেক বনসলের নাম বছর দু’য়েক আগে অন্য অপরাধের মামলায় জড়িত হিসাবে জানতে পেরেছিল শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট।
অভিযোগ ছিল, শহরের কয়েকশো লোকজনের অ্যাকাউন্ট ভাড়ায় নিয়ে তাতে সাইবার অপরাধের টাকা লেনদেন করত অভিষেক। ২০২২ সালে ডিসেম্বর মাসে পুলিশের খাতায় নাম উঠতেই রাতারাতি উধাও হয়ে যায় সে। এর পরে বিদেশে ঘাঁটি গেড়ে সেখান থেকেই কোটি কোটি টাকার প্রতারণার চক্রের ‘কিং পিন’ হয়ে উঠেছিল।
রাজ্য পুলিশের সাইবার শাখা ও বিধাননগর সিটি পুলিশ অভিষেক-সহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে। এই চক্রের মূল ‘মাথা’ অভিষেক বনসল। শিলিগুড়ির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের খালপাড়ার এম আর রোডে থাকত সে। সেখানেই একটি আবাসনে তার ফ্ল্যাট রয়েছে। সূত্রের দাবি, তার পরিবার সেখানেই থাকে। যদিও আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীর দাবি, “অভিষেক অনেক দিন থাকেন না এখানে। পরিবার এখানে থাকত। এখন কোথায় থাকে ,জানি না।” ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শালিনী ডালমিয়া বলেন, “যে আবাসনে লোকটি থাকত, সেখানে বাইরের লোকজনের বেশি থাকে। ওর সম্পর্কে এর বেশি কিছু জানা নেই।”
২০২২ সালে পতিরামজোতে একটি বাড়িতে হানা দেয় মাটিগাড়া থানা, গোয়েন্দা বিভাগ এবং এসওজি (স্পেশাল অপারেশন্স গ্রুপ)। বাড়িটি থেকে প্রচুর ব্যাঙ্কের পাশবই, ডেবিট কার্ড উদ্ধার হয়েছিল। গ্রেফতার করা হয়েছিল তিন জনকে। তদন্তে উঠে এসেছিল, ৫ নম্বর ওয়ার্ড ও সংলগ্ন এলাকার কিছু গরিব লোকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিয়ে তার মাধ্যমে প্রতারণার টাকা লেনদেন হত। অ্যাকাউন্ট পিছু এক জনকে আট হাজার টাকা দেওয়া হত বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রের দাবি, সে মামলায় গ্রেফতার হওয়া তিন যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই অভিষেকের নাম উঠে এসেছিল। তবে পুলিশ নাম জানার আগেই শিলিগুড়ি ছেড়ে গা-ঢাকা দেয় সে। পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হওয়ার সুবাদে ব্যবসায়ীদের হিসাবনিকাশ দেখত। কিন্তু করোনার আগে থেকে সেই কাজ তার কর্মীরা দেখভাল করত বলে খবর। শহরের বেশ কিছু বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মী ও আধিকারিকদের সঙ্গে ওঠাবসা ছিল তার। অভিযোগ, ভুয়ো নথি বানিয়ে ঋণ পাইয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলিয়ে তাতে লেনদেন করাত অভিষেক। কিন্তু চুপিসাড়ে প্রতারণার এত বড় ‘সাম্রাজ্য’ সে বানিয়ে ফেলেছিল জেনে, কিছুটা অবাক শিলিগুড়ির পুলিশকর্তারা।