রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
সব ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু আবহাওয়ার কারণে বুধবার কোচবিহার সফর বাতিল করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তবে শুক্রবার আর অপেক্ষা করলেন না তিনি। সন্ধ্যায় সড়কপথে কালিম্পং থেকে কোচবিহার আসছেন রাজ্যপাল। রাতে কোচবিহার সার্কিট হাউসে উঠবেন তিনি।
গত কয়েক দিন ধরে অশান্ত কোচবিহার। তৃণমূল এবং বিজেপির সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়েছে দিনহাটা। রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহের বিধানসভা এলাকা দিনহাটা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের লোকসভা কেন্দ্রে রক্ত ঝরেছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক তৃণমূল কর্মীর। জখম হয়েছেন অন্তত ছ’জন। এই আবহে রাজ্যপালের কোচবিহার সফর নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। বিজেপি চাইছে শুক্রবার রাতেই রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে। অন্য দিকে, তৃণমূল তাকিয়ে রাজ্যপালের কর্মসূচির দিকে। যদিও এখনও রাজ্যপালের পরবর্তী কর্মসূচি জানা যায়নি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং বা ভাঙড়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষের পর যে ভাবে রাজ্যপাল ছুটে গিয়েছিলেন, কোচবিহারেও কি তিনি তাই করবেন? এ নিয়ে কৌতূহলী শাসক এবং বিরোধী, দুই পক্ষই।
মঙ্গল ও বুধবার পর পর দু’দিনে উত্তরবঙ্গে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাংবিধানিক প্রধান সিভি আনন্দ বোস। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি থেকে বাগডোগরা যাওয়ার পথে মমতার কপ্টার বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। তড়িঘড়ি সেবকে অবতরণের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সেখানেই হেলিকপ্টার থেকে নামার সময় মুখ্যমন্ত্রী জখম হন। বুধবার তেমনই দুর্যোগের আশঙ্কায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে নিয়ে আকাশে ওড়েনি হেলিকপ্টার। বাতিল হয়ে যায় রাজ্যপালের কোচবিহার সফর। তিনি চলে যান শিলিগুড়িতে। শুক্রবার কালিম্পঙ কলেজে একটি কর্মসূচি ছিল রাজ্যপালের। স্থানীয়দের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন তিনি। সূত্রের খবর, এর পর আচমকাই কোচবিহার আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্যপাল বোস।
রাজ্যপালের সফর প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘‘রাতেই আমাদের বিধায়কদের নিয়ে তৈরি প্রতিনিধি দল ওঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চাইব। গত কয়েক দিনে এলাকার সন্ত্রাস পরিস্থিতির কথা রাজ্যপালকে জানাতে চাই আমরা।’’ তবে শুক্রবার রাতে রাজ্যপালের সময় না পেলে শনিবারও দেখা করতে চায় বিজেপি।
অন্য দিকে, তৃণমূল চেয়েছিল রাজ্যপাল নিজে দিনহাটার গীতালদহে তাদের মৃত কর্মীর বাড়িতে যান। যেমন তিনি অশান্ত ভাঙড়ে গিয়েছেন। কিন্তু রাজ্যপালের কর্মসূচি নিয়ে এখনও স্পষ্ট কিছু জানতে না পেরে শাসকদল বলছে, ‘‘আগে রাজ্যপাল আসুন। তার পর দেখা যাবে।’’ তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায়ের কথায়, ‘‘বুধবার আসার কথা ছিল রাজ্যপালের। কিন্তু পরে তাঁর সফর বাতিল হয়ে যায়। এখন শুনছি, উনি আসছেন। উনি আসুন। তখন আমরা যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেব।’’