ফাইল চিত্র।
ভোটের সময় নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন পুরসভাগুলোতে প্রশাসক বোর্ডে থাকা রাজনৈতিক নেতাদের সরিয়ে দিয়েছিল। ভোটের পর রাজ্য সরকার সেই পুরনো প্রশাসক বোর্ডকেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফিরিয়ে আনলেও শিলিগুড়ি ব্যতিক্রম কেন, সেই প্রশ্ন তুললেন আগের প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন অশোক ভট্টাচার্য। তাঁর অভিযোগ, কলকাতা থেকে দিনহাটা, মেখলিগঞ্জ সমস্ত পুরসভার ক্ষেত্রেই ভোটের আগে যে প্রশাসক বোর্ডকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাদের বহাল করা হয়েছে। অথচ শিলিগুড়িতে তা না করে গৌতম দেবকে চেয়ারপার্সন করে চারজনের বোর্ড গঠন করা হল কেন সেই প্রশ্ন তুলেছেন।
অশোক অভিযোগ করেন, ‘‘রাজ্যের অন্যান্য জায়গার যে আইন, শিলিগুড়ি কি তার বাইরে? আসলে পিছনের দরজা দিয়ে পুরসভায় আসার একটা উদ্দেশ্য ছিল। সেটাই চরিতার্থ করা হচ্ছে। অথচ আগের প্রশাসক বোর্ডে যে সদস্যেরা ছিলেন তাঁরা দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর। তাঁদের রাখা হল না।’’ তা ছাড়া অন্য পুরসভাগুলিতে আগের কাউন্সিলরদের কোঅর্ডিনেটর হিসেবে বহাল করা হয়েছে। এখানে তা কেন করা হয়নি, সেই প্রশ্ন তুলেছেন।
নতুন বোর্ড গঠনের পর দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে। এতদিন পর কেন অভিযোগ তুলছেন? অশোকের জবাব, ‘‘ভেবেছিলাম করোনা পরিস্থিতিতে তারা কাজ করবে। কিন্তু সেই ভুল ভেঙেছে। প্রশাসক বোর্ডে বসে তাঁরা দল ভাঙানোর কাজ করছেন।’’
পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘ওঁর কথার কোনও উত্তর দিতে চাই না। সপ্তাহে সাতদিন কাজ করছি। রবিবারও কাজ করছি। আমরা মানুষের কাছে দায়বদ্ধ। কোনও ব্যক্তির কাছে নয়। কোভিড মোকাবিলা অগ্রাধিকার। তবে পুরসভাকেও সচল রাখতে হবে।’’ সেই কারণেই ভবিষ্যতের কিছু পরিকল্পনা এবং বর্তমান কাজের বিষয়টির দিকে তাকিয়ে চলছেন বলে জানান। তাঁর কথায়, ‘‘অশোকবাবু যা বলছেন তা একেবারেই অনভিপ্রেত। তাঁকে বলেছি, তিনি বর্ষীয়ান মানুষ। তাঁর কোনও পরামর্শ থাকলে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখে কাজ করার চেষ্টা হবে। নির্বাচন এলে তিনি রাজনীতি করুন। গরিব মানুষদের ভাতা ১৩ মাসের বকেয়া রেখে গিয়েছেন। তার তহবিলও তো জোগাড় করতে হচ্ছে এখন।’’
সম্প্রতি পুরসভার প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র তথা আরএসপি নেতা রামভজন মাহাতো এবং প্রাক্তন মেয়র পারিষদ তথা সিপিএম কাউন্সিলর কমল আগরওয়াল তৃণমূলে যোগ দেন। যোগ দেন ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেসের প্রাক্তন কাউন্সিলর সীমা সাহাও। অভিযোগ, সিপিএমের আরও কয়েকজন প্রাক্তন কাউন্সিলরকে দলে টানার চেষ্টা করছে তৃণমূল।
যেখানে অন্যান্য পুরসভায় আগের প্রশাসক বোর্ডকে রাখা হয়েছে, এখানে তা হল না কেন? গৌতমের জবাব, ‘‘সেটা সরকারি সিদ্ধান্ত। আমি বলতে পারব না। উত্তরও দেব না।’’ তবে বিধানসভা ভোটে হারার পর অশোকই জানিয়েছিলেন, তিনি যেহেতু হেরে গিয়েছেন সেই কারণে প্রশাসক বোর্ডে থাকতে চান না। তা হলে এখন তিনি কেন এই প্রশ্ন তুলছেন।
অশোকের কথা, ‘‘আমি থাকতে চাই না সেটা তো আছেই। কিন্তু সরকার তো অন্য পুরসভার ক্ষেত্রে যে নির্দেশিকা দিয়েছে এ ক্ষেত্রে তাই দেবে। সেটা তো করেনি।’’