খুলল সিপিএম অফিস, পাতে খিচুড়িও

ভাঙামালির এই এলাকায় বরাবরই শাসকদলের পুরোদস্তুর তেজ থাকে। বাম আমলে সিপিএমই ছিল এই এলাকায় শেষ কথা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৯ ০৫:১২
Share:

উপ-ভোগ: পার্টি অফিস খোলা উপলক্ষে খিচুড়ি বিলি। নিজস্ব চিত্র

খিচুড়ি খাইয়ে সাত বছরের বন্ধ পার্টি অফিস খুলল সিপিএম। শনিবার বিকেলে জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া ভাঙামালিতে সিপিএম পার্টি অফিসের ‘পুনঃউদ্বোধন’ হয়েছে। মাইক বেঁধে ছোট একটি সভাও হয়েছে। আশেপাশের বাতিস্তম্ভগুলিতে লাল পতাকাও বাঁধা হয়েছিল এ দিন।

Advertisement

ভাঙামালির এই এলাকায় বরাবরই শাসকদলের পুরোদস্তুর তেজ থাকে। বাম আমলে সিপিএমই ছিল এই এলাকায় শেষ কথা। ২০১১ সালে পরিবর্তনের পরে এলাকার বদলে যায় ঘাসফুলে। এলাকায় লাল পতাকা লাগানো যাবে না— এমনই ফতোয়া দেওয়া হয়েছিল বলে বামেদের অভিযোগ। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ভাঙামালি বাজারের সিপিএমের পার্টি অফিস। লোকসভা ভোটে জলপাইগুড়িতে বিজেপির জয়ের পরে এ দিন ফের খুলল সেই অফিস।

সিপিএম পার্টি অফিস উদ্বোধনের বিকেল ভাঙামালি ম ম করল খিচুড়ির গন্ধে। পার্টি অফিসের পিছনেই একটি বাড়িতে ঢালাও খিচুড়ি রান্নার ব্যবস্থা হয়েছিল। ১৫ কেজি চাল, ৮ কেজি ডালের ‘ভুনা’ খিচুড়ি রান্না হয়েছে। আলাদা করে লাবড়া হয়নি। খিচুড়ির মধ্যেই আলু, স্কোয়াশ নানা আনাজ দেওয়া হয়েছিল। দু’শো ফয়েল প্যাকেটে ভরে সেই খিচুড়ি বিলি করা হয়েছে বিকেলে জনসভার পরে। তৃণমূলের নেতাদের একাংশের দাবি, সিপিএমের সভায় ঢালাও খিচুড়ি রান্নার ঘটনা বিরল। বর্তমানে গ্রামেগঞ্জে বিজেপির সভায় কর্মীদের জন্য খিচুড়ির ব্যবস্থা দেখা যায় বলে দাবি। আর নাম-সংকীর্তনের আসরে তো খিচুড়ি অপরিহার্য।

Advertisement

সিপিএমের জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য নিজেই এসেছিলেন লোকাল পার্টি অফিস উদ্বোধনে। তিনি বলেন, “আমাদের সঙ্গে অন্য কোনও দলের সম্পর্ক নেই। এই পার্টি অফিস থেকে সাধারণ মানুষকে সাহায্য করাই হবে আমাদের মূল লক্ষ্য।’’

জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রে এ বার তৃণমূল বড় ব্যবধানে হেরেছে। ভাঙামালি এলাকাটি কুকুরজান গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। লোকসভা ভোটের নিরিখে এই পঞ্চায়েতটিতেও হেরেছে তৃণমূল। বাজারের ব্যবসায়ীদের দাবি, তার পর থেকেই এলাকায় গেরুয়া পতাকার দাপট বেড়েছে। বিজেপির ঘনঘন মিছিল হচ্ছে। এলাকায় শোনা যাচ্ছে, বিজেপি কর্মীদের আশ্বাসেই পার্টি অফিস খুলছে সিপিএম। কেউ কেউ বলছেন, হবে না-ই বা কেন, তাদের বহু পুরোনো কর্মীই এখন বিজেপিতে। এলাকার নেতা তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মোকতাল হোসেনের ছেলেই এখন সক্রিয় বিজেপি কর্মী।

সিপিএমের জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য অবশ্য তৃণমূল ও বিজেপি দুই দলকেই আক্রমণ করেছেন। সঙ্গে দাবি করেছেন, দেশ এবং রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে এই ‘নতুন’ পার্টি অফিস থেকেই এলাকার বাসিন্দাদের রাজনৈতিক ‘দিশা’ দেখানো হবে। অফিস উদ্বোধনের পরে বক্তারা এলাকাবাসীদের ‘সংগ্রামী অভিনন্দন’ জানিয়ে সভা শেষ করেন। তার পরেই সকলের হাতে হাতে ধরিয়ে দেওয়া খিচুড়ির প্যাকেট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement