হামলার প্রতিবাদে গঙ্গারামপুরে মিছিল বামফ্রন্টের।
রবিবাসরীয় প্রচারে বিভিন্ন দলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠল।
রবিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারে বেরিয়ে শাসক দলের আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলে সরব হল সিপিএম। এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ দলের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক মানবেশ চৌধুরী সহ পুরভোটে প্রার্থী ও কর্মীরা হামলার শিকার হন বলে অভিযোগ। ঘটনার প্রতিবাদে সিপিএমের তরফে গঙ্গারামপুর শহরে ধিক্কার মিছিল করে থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। রাস্তায় তাঁদের পথ আটকে শাসক দলের একদল দুষ্কৃতী হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। মানবেশবাবুর দাবি, সেসময় দলটি মারমুখী হয়ে তাদের ধাক্কাধাক্কি করে।
হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সিপিএম থেকে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের সিপিএমের জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাস অভিযোগ করেন, ‘‘একদিকে তৃণমূল প্রচারে বাধা দিয়ে চড়াও হচ্ছে। অন্য দিকে, অভিযোগ জানাতে গেলে জেলাশাসক অভব্য আচরণ করছেন। রাজনৈতিক নেতার মতো বিবৃতি দিচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে গঙ্গারামপুরে সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন সম্ভব নয়।’’ প্রতিবাদে আজ, সোমবার বালুরঘাটে জেলাশাসকের অফিসের সামনে বিক্ষোভ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে সিপিএম। নারায়ণবাবুর অভিযোগ, তৃণমূলের সন্ত্রাস ও জেলাশাসকের রাজনৈতিক আচরণের অভিযোগে তাঁরা সোমবার বালুরঘাটের প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রতিবাদ আন্দোলন করব।
এদিন গঙ্গারামপুরে ধিক্কার মিছিল করে সিপিএম। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা থাকায় কমব্যাট ফোর্স নামিয়ে টহল দেওয়া হয়। জেলা পুলিশ সুপার শীশরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র অবশ্য বলেন, ‘‘অভিযোগ ভিত্তিহীন। সিপিএম কয়েকজন বহিরাগত নেতাকে নিয়ে প্রচার করার সময় তাদের আগে কোনওদিন দেখেননি বলে স্থানীয় কয়েকজন জানতে চাইলে সিপিএম নেতারা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে মিথ্যা হামলার অভিযোগ তোলেন।’’ এরপর ১০-১৫ জন মিলে একটি মিছিল বের করে শহরে প্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন বলে বিপ্লববাবুর দাবি।
পুলিশি টহল।
শনিবার রাত একটা-দেড়টা নাগাদ শিলিগুড়ির ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী চৈতালি বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতেও হামলা হয় বলে অভিযোগ। আনুমানিক চার-পাঁচ জনের একটি দল তাঁর বাড়িতে গভীর রাতে হামলা চালান বলে অভিযোগ করেন চৈতালিদেবী। এই নিয়ে শিলিগুড়ি কমিশনারেটে স্মারকলিপি জমা দেন বিজেপি মহিলা মোর্চার শিলিগুড়ি শাখা। মহিলা মোর্চার সহ-সভাপতি সবিতা অগ্রবালের কথায়, “আমরা কমিশনারেটে অভিযোগ জানিয়েছি, যাতে আগামী দিনে প্রার্থীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হয়।’’
বিজেপি-র অভিযোগ, রাতে চৈতালিদেবীর বাড়ির দরজায় সজোরে লাথি মেরে অশ্রাব্য গালিগালাজ করে চার-পাঁচজন। বাড়ির বিদ্যুতের মেন সুইচ অফ্ করে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মহিলা মোর্চা শিলিগুড়ি শাখার পরিদর্শক গীতা চট্টোপাধ্যায় জানান, পুলিশ কমিশনার আশ্বস্ত করেছেন যে, ভবিষ্যতে মহিলা প্রার্থীদের নিরাপত্তা বাড়াতে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আরো পুলিশ নজরদারি করা হবে। তাঁর অভিযোগ, “রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তা তলানিতে ঠেকেছে। এখন আমরা অসহায় বোধ করছি।’’ তবে দলের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ভাবে কারও দিকে অভিযোগের আঙুল তোলা হয়নি।
শনিবার রাত থেকে রবিবারের মধ্যে শিলিগুড়়ি পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রসে প্রার্থী বাসুদেব ঘোষে’র দুটি ফ্লেক্স কেটে দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেসের তরফে পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছে। একই ভাবে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী প্রশান্ত সিনহালও অভিযোগ করেছেন, তাঁরও একাধিক ব্যানার কেটে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী নান্টু পালের সমর্থনে লাগানো পোস্টারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিটি বিকৃত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। একই ভাবে তৃণমূলের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সমীরণ সুত্রধরের অভিযোগ, তাঁর দুটি ফ্লেক্স কেটে ফেলা ছাড়়াও একটি কলোনি থেকে একাধিক পতাকা খুলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তিন দলের তরফেই পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছে।
রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।