খোলামেলা: পাঠচক্রে চলছে আলোচনা। নিজস্ব চিত্র
সুদিন গিয়েছে। রাজ্য জুড়েই এখন কোণঠাসা দশা সিপিএমের। মালদহ জেলাও তার ব্যতিক্রম নয়। এমনই পরিস্থিতিতে কর্মীদের নিয়ে খোলামেলা আলোচনার আসর ‘পাঠচক্রে’ ফিরল দল।
রবি, সোম ও মঙ্গলবার পালা করে জেলায় সিপিএমের সব শাখা কমিটিতেই এই পাঠচক্রের আসর বসেছিল। কোথাও দলের শাখা অফিসে বা কোথাও গাছতলায়, কোথাও স্কুল বারান্দায় কর্মীরা বসে বর্তমান রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘দলের রাজ্য কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মালদহ জেলায় পাঠচক্র কর্মসূচি হয়েছে। দলের গঠনতন্ত্র নিয়েই সেখানে আলোচনা হয়।’’
শেষ কবে এই জেলায় সিপিএমের শাখাগুলিতে এমন কর্মসূচি হয়েছে, তা মনে করতে পারছেন না দলের অনেক প্রবীণ নেতাই। জেলা সিপিএমের এক প্রবীণ নেতা জানালেন, বহু বছর আগে এমন পাঠচক্র হত। সেটা অবশ্য ‘শিক্ষণ শিবির’ হিসেবেই পরিচিত ছিল। মাঝে বিক্ষিপ্ত ভাবে কোনও কোনও শাখা ওই শিবির করলেও বেশির ভাগ শাখাতেই তা হত না। বিশেষ করে দল দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকা দলীয় পার্টি কর্মীরা সে সব ভুলেই গিয়েছিলেন।
তাই নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন, দুর্দিনে এটা উপযোগী পদক্ষেপ। তাঁর দাবি, সিপিএমের মতো অনুশাসনে চলা দলে খোলামেলা আলোচনার সুযোগ কম থাকে। কিন্তু এই ধরনের পাঠচক্রে দলের কর্মীদের মধ্যে মত বিনিময়ের একটা সুযোগ তৈরি হয়।
বিধানসভা নির্বাচনের আর দু’বছর বাকি। গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে মালদহ জেলায় দু’টি আসন পেয়েছিল দল। একটি আসনে বাম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী জিতেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী কালে তিন জনের মধ্যে দু’জন তৃণমূল ও এক জন বিজেপিতে নাম লেখান। ফলে জেলা থেকে বিধানসভায় দলের কোনও প্রতিনিধিত্ব আর নেই। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের একটি আসনও পায়নি দল। বাকি থাকা পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরেও দলের ফল রীতিমতো শোচনীয়। এই পরিস্থিতিতে দলীয় কর্মীদের উজ্জীবিত করতে পাঠচক্রের মতো কর্মসূচিতে এলাকায় এলাকায় দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে নিবিড় সংযোগ গড়ে উঠবে বলেই মনে করছেন সিপিএম নেতৃত্ব। বসে যাওয়া কর্মীরা ফের সক্রিয় হবেন বলেও তাঁদের আশা। জেলা সিপিএমের এক নেতার কথায়, শাখায় শাখায় এমন কর্মসূচি সময়োপযোগী। এরকম আলোচনা যত বেশি হবে ততই ভাল।