নেটিজেনদের থেকে ধেয়ে এসেছে কটাক্ষ, কর্মীরাই বা কতক্ষণ কম্পিউটারের পর্দা আর ম্যানেজারদের মুখে দিকে তাকিয়ে থাকতে পারেন? — প্রতীকী চিত্র।
ইনফোসিসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এন আর নারায়ণমূর্তি সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করার পরামর্শ দিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন। তবে তাঁর থেকে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজের সওয়াল করেছেন লার্সেন অ্যান্ড টুব্রোর (এলঅ্যান্ডটি) চেয়ারম্যান এস এন সুব্রহ্মণ্যন। এমনকি রবিবারেও ছুটি না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। দ্রুত ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিয়োয় ক্ষোভ আছড়ে পড়েছে নেট দুনিয়ায়। প্রশ্ন উঠেছে, কর্মীদের কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য রক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে অগ্রাহ্য করা নিয়ে। সম্প্রতি শিল্পপতি গৌতম আদানি মন্তব্য করেন, আট ঘণ্টা পরিবারের সঙ্গে থাকলে তাঁর স্ত্রী পালিয়ে যাবেন।
বৃহস্পতিবার সংবাদ সংস্থার খবর অনুসারে, একটি ভিডিয়োয় কর্মীদের উদ্দেশে সুব্রহ্মণ্যনকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আপনাকে যদি বিশ্বের সেরা হতে হয়, তা হলে সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজ করা উচিত।’’ তিনি জানান, চিনের এক ব্যক্তি তাঁকে বলেছেন, সেখানে কর্মীরা সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজ করেন। আমেরিকায় কাজ হয় ৫০ ঘণ্টা। তাই চিন উন্নতির নিরিখে আমেরিকাকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। কর্মীদের বাড়িতে কম এবং অফিসে বেশি সময় কাটানোর আর্জিও জানান তিনি। সামাজিকমাধ্যমে ছড়ানো ভিডিয়োটিতে তাঁর মুখে শোনা যায়, ‘‘আমার আফসোস হয়, আপনাদের রবিবার কাজ করাতে পারছি না। যদি পারি, আরও খুশি হব। কারণ, আমি রবিবার কাজ করি।’’ তার পরেই তিনি বলেন, ‘‘কী করবেন বাড়িতে বসে? কতক্ষণ স্ত্রীর মুখ দেখবেন? কতক্ষণ স্ত্রীরাই বা স্বামীর দিকে তাকিয়ে থাকতে পারেন? তার চেয়ে অফিসে আসুন এবং কাজ শুরু করুন।’’
স্বাভাবিক ভাবেই বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন এলঅ্যান্ডটি কর্তা। ঝড় উঠেছে সমাজমাধ্যমে। নেটিজেনদের থেকে ধেয়ে এসেছে কটাক্ষ, কর্মীরাই বা কতক্ষণ কম্পিউটারের পর্দা আর ম্যানেজারদের মুখে দিকে তাকিয়ে থাকতে পারেন? একাংশের ক্ষোভ, চড়া বেতন পাওয়া সংস্থার শীর্ষ কর্তাদের কাজের চাপ আলাদা। কম বেতন দিয়ে একই চাপ নিতে বলা হচ্ছে সাধারণ কর্মীদেরও। কেউ বলেছেন, ‘‘সংস্থার সিইও নির্লজ্জ ভাবে দাসত্বের প্রচার করছেন।’’
অবস্থা বেগতিক দেখে চটজলদি এলঅ্যান্ডটি বিবৃতি দিয়ে বলে, ‘‘চেয়ারম্যান বলতে চেয়েছেন, দেশের জন্য অসাধারণ কিছু পেতে হলে অসাধারণ উদ্যোগ জরুরি। লক্ষ্য পূরণে কর্মীদের স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি খাটতে হবে।’’