মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। Sourced by the ABP
আবাস প্রকল্পে কেন্দ্রের বিধি মতো নাম-লোগোর ‘ব্র্যান্ডিং’ না মানার অভিযোগ উঠেছিল রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। ওই প্রকল্পে কেন্দ্রের বরাদ্দ বন্ধের নেপথ্যে সেটাকে অন্যতম একটা কারণ বলেও মনে করেন প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ। তবে এ বার আবাসের বাড়ি তৈরির প্রশ্নে নাম-লোগোর ‘ব্র্যান্ডিং’ মানার ব্যাপারে জেলাকর্তাদের বাড়তি সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। প্রসঙ্গত, এই প্রকল্পে আপাতত পুরো টাকাটাই নিজেদের কোষাগার থেকে দিচ্ছে রাজ্য সরকার।
আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, কেন্দ্রীয় বিধিতে নাম-লোগোর ‘ব্র্যান্ডিং’ মানলে রাজ্যকে লিখতে হত ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’। কিন্তু এখন তা হবে ‘বাংলার বাড়ি’ নামে।
প্রকল্প রূপায়ণে যে বিধিগুলি জেলাকর্তাদের নবান্ন স্থির করে দিয়েছে, তাতে এই বিষয়টি অবশ্য পালনীয়। বলে দেওয়া হয়েছে, রাজ্যের নির্দিষ্ট করে দেওয়া নকশা মেনে নাম এবং লোগো ছাপাতে হবে নতুন তৈরি বাড়ির গায়ে। বাড়ি তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে আবাস প্রকল্পের জন্য তৈরি পোর্টালে তার ছবি আপলোড করতে হবে। বাড়ির সেই ছবিটি তুলতে হবে নাম-লোগো সমেত।
২০২২ সালের নভেম্বর মাসে ১১ লক্ষ আবাস-উপভোক্তার নামের তালিকায় অনুমোদন দিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু তার পর থেকে এতদিন ধরে সেই প্রকল্পে কেন্দ্রীয় ভাগের অর্থ বন্ধ রেখেছে তারা। প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, কেন্দ্রীয় অনুদানভুক্ত প্রকল্পগুলিতে অর্থ মন্ত্রকের ‘ব্র্যান্ডিং’ বিধি মানতে হয়। তাতে প্রকল্পে কেন্দ্রের স্থির করা নাম এবং লোগো ছাপানোর কথা। সেটাই রাজ্য উপেক্ষা করছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। তাই এই প্রশ্নে এখন রাজ্যের অবস্থান ভিন্ন কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অবশ্য, রাজ্যের কর্তাদের একাংশের দাবি, প্রকল্পে কেন্দ্র ৬০% দিলেও, রাজ্যকে বাকি ৪০ ভাগ টাকা দিতে হয়। ফলে শুধুমাত্র কেন্দ্রের স্থির করা ‘ব্র্যান্ডিং’ বিধির বাধ্যতামূলক মান্যতা পুরোপুরি যুক্তিসম্মত নয়। রাজ্যের এখনকার ‘ব্র্যান্ডিং’-এ মুখ্যমন্ত্রীর নাম কোথাও ব্যবহার করা হয়নি। বরং তাতে রাজ্যের উল্লেখ থাকছে শুধুমাত্র। পুরোপুরি নিজ অর্থের প্রকল্পে এই পদক্ষেপ করতেই পারে সরকার।
এই দফায় এক লপ্তে ১২ লক্ষ বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হবে রাজ্যে। লিখিত বার্তায় জেলাকর্তাদের নবান্ন জানিয়েছে, উপভোক্তাকে নিজেকেই বাড়ি তৈরি করাতে হবে। আবার টাকা পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে বাড়ির নির্দিষ্ট কিছু অংশের কাজ শেষ করতেই হবে। তাই বাড়ি নির্মাণের কারিগরের ঘাটতি যাতে দেখা না যায়, নিশ্চিত করতে হবে তা-ও। এ ক্ষেত্রে জেলাভিত্তিক ভাবে প্রশিক্ষিত কারিগরদের তথ্যভান্ডার তৈরির নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।