সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। — ফাইল চিত্র।
মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির উপনির্বাচনে জিতে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। দল বদলের রাজনীতির দিকে লক্ষ্য রেখে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের হুঁশিয়ারি, “এ বার ভোটে জিতে যাঁরা দল বদল করবেন, তাঁদের মানুষ জুতোপেটা করবেন।” সিপিএমের দাবি, সাগরদিঘির পরে বিজেপি এবং তৃণমূল দু’দলই ভয় পেয়েছে। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, দিশাহারা হয়ে এমন বলছেন সেলিম।
কোচবিহার সফরে বৃহস্পতিবার এসেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। মেখলিগঞ্জে তিনি দলের একটি কর্মিসভায় যোগ দেন। তার আগে, কোচবিহার জেলা কার্যালয়ে দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে যোগ দেন। এ দিন জেলায় আরও একাধিক কর্মসূচি ছিল বামেদের। কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের পানিশালা পঞ্চায়েতে একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনার ঘর ও একাধিক দাবিতে স্মারকলিপি দেয় সিপিএম। দলের এই কর্মসূচির মধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
উপনির্বাচনে সাগরদিঘিতে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের জয়ের পরে, ঘুরে দাঁড়ানোর কথা ভাবতে শুরু করে বামেরা। সে মতোই কর্মসূচি নেওয়াও শুরু হয়। কিন্তু তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নব জোয়ার’ কর্মসূচির মধ্যে বাইরন বিশ্বাস তৃণমূলে যোগ দেন। তাতে বাম-কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা হতাশ হয়ে পড়েন। তবে কোচবিহারের মতো জেলায় বামেরা ধীরে ধীরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রার্থী নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক হয় বামেদের। সে সঙ্গে গ্রামে-গ্রামে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজও শুরু করে তারা। এই সময়ে বাম কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। তাঁদের কয়েক জনের কথায়, “আমরা ঝুঁকি নিয়ে লড়াই করে প্রার্থীকে ভোটে জেতাব। তার পরে, সেই প্রার্থী শাসকদলে চলে যাবেন, এমন হলে লড়াইয়ের কোনও মানে হয় না।’’
সেলিম অবশ্য এ দিন বলেন, “মানুষ যত ঐক্যবদ্ধ হতে শুরু করেছেন, তত তৃণমূল ও বিজেপি ভয় পাচ্ছে। বাইরন বিশ্বাসের দল বদলের পরে মানুষ জুতোর মালা পরিয়েছে তাঁর ছবিতে। তার মানে, মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে শুরু করেছেন। এর পরে, এমন দল বদল হলে জুতো পেটা করবেন মানুষ।” তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় অবশ্য বলেন, “মানুষের উপরে ভরসা নেই বলেই এমন কথা বলছেন বাম নেতারা। আমরা মানুষের উপর ভরসা করেই এগিয়ে যাচ্ছি।” বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, ‘‘বামেদের এখন কোথাও কোনও অস্তিত্ব নেই। যা-ও বা দু’একজন রয়েছেন, তাঁরাও অন্য দলে চলে যাচ্ছেন। তাই যা খুশি বলছেন।’’