প্রতীকী ছবি।
স্ত্রীর মৃত্যুর পরে কেটে গিয়েছে সাত মাস। তার পরেও মৃত স্ত্রীর করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ় সম্পন্নের এসএমএস পেয়ে চোখ কপালে উঠেছিল স্বামীর। মালদহের হবিবপুরের বুলবুলচন্ডীর ওই পরিবারের দাবি, শংসাপত্রে টিকাকর্মী থেকে টিকা গ্রহণ কেন্দ্রের নামও রয়েছে। ‘মৃতের টিকা’ ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই অস্বস্তিতে পড়েছে স্বাস্থ্য দফতর। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে সাফাই দিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।
হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচণ্ডীর বাসিন্দা সঞ্জীবকুমার রায়। তাঁর স্ত্রী অঞ্জু রায় (৫০) ২০২১ সালের ২ জুলাই মারা যান। তিনি অসুস্থ ছিলেন। পরিবারের দাবি, ২০২১ সালের ২৪ এপ্রিল করোনা টিকার প্রথম ডোজ় নিয়েছিলেন অঞ্জু। চলতি বছর ৪ ফেব্রুয়ারি মৃত অঞ্জুর দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়া হয়েছে বলে মোবাইল ফোনে এসএমএস পান সঞ্জীব। ঘটনায় হকচকিয়ে যান তিনি। টিকার শংসাপত্রটি ডাউনলোড করান। শংসাপত্র দেখে আরও অস্বস্তিতে পড়ে যান সঞ্জীব। কারণ, শংসাপত্রে টিকা নেওয়ার তারিখ রয়েছে। মালদহ জেলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে টিকা নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। টিকা যিনি দিয়েছেন তাঁর নামও রয়েছে।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে যায় গ্রামে। মৃত্যুর সাত মাস পরেও কী ভাবে দ্বিতীয় ডোজ় হল, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। অভিযোগ, প্রথম ডোজ় নেওয়ার পরে অনেকেই দ্বিতীয় ডোজ়ের এসএমএস পাননি। টিকার শংসাপত্রও মিলছে না বলে অভিযোগ। এমন অবস্থায় মৃতের করোনা টিকার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তিতে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। সঞ্জীব বলেন, “স্ত্রী প্রথম ডোজ় নিয়েছিলেন। তবে মারা যাওয়ার পরেও তাঁর নামে দ্বিতীয় ডোজ়ের এসএমএস পেয়ে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তাই শংসাপত্রটি দোকান থেকে ডাউনলোড করি। সেটা হাতে পেয়ে আরও অবাক হয়ে যাই।”
টিকার ভুল নিয়ে কেন্দ্রকে খোঁচা দিয়ে সরব হয়েছেন বুলবুলচণ্ডী পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের সমীর সাহা। তিনি বলেন, “কেন্দ্র টিকা নিয়ে প্রচারেই ব্যস্ত। শংসাপত্রে প্রধানমন্ত্রীর ছবি রয়েছে। প্রচার করার জন্য মৃতকেও টিকা দেওয়া হয়েছে বলে শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছে।” হবিবপুরের বিধায়ক বিজেপির জোয়েল মুর্মু বলেন, “টিকা দিচ্ছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা। নিজেদের ভুল ঢাকতে কেন্দ্রের নামে দায় চাপানো হচ্ছে।” খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মালদহের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পাপড়ি নায়েক। তিনি বলেন, “ঘটনাটি কাম্য নয়। কী ভাবে এমন হল খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”