প্রতীকী ছবি।
পর্যটকদের করোনা পরীক্ষা করা নিয়ে স্বাস্থ্য দফতর সিদ্ধান্ত নিতেই মাথায় হাত পর্যটন ব্যবসায়ীদের। এর ফলে ডুয়ার্সে ফের একবার পর্যটন ব্যবসা ব্যাপক হারে মার খাওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁদের একাংশ। তবে হুগলির তিন পর্যটককে নিয়ে ঘটে যাওয়া পরিস্থিতি এড়াতে বিদেশ থেকে আসা কোনও পর্যটককেই আপাতত বুকিং না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসরকারি লজ ও রিসর্ট মালিকদের একটি সংগঠন।
লন্ডন থেকে ২০ ডিসেম্বর কলকাতায় ফেরা এক যুবকের শরীরে সম্প্রতি করোনার নতুন ‘স্ট্রেন’ ধরা পড়ে। কিন্তু ওই একই বিমানের তিন যাত্রী ২৯ ডিসেম্বর বক্সায় ঘুরতে আসেন। ৩০ ডিসেম্বর সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আলিপুরদুয়ার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অন্দরে হইচই শুরু হয়ে যায়। তবে ৩১ ডিসেম্বর প্রত্যেকের লালারসের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় স্বস্তি পান জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা।
নতুন বছরের প্রথম দিন ওই তিন জন-সহ তাঁদের সঙ্গে আসা পরিজনেরাও বক্সা ছেড়ে বেরিয়ে যান। কিন্তু ১৪ দিন হোম কোয়রান্টিনে না থেকে কেন তাঁরা ঘুরতে বেরলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
পর্যটনের ভরা মরসুমে এই ঘটনা চিন্তা বাড়িয়ে দেয় আলিপুরদুয়ার জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের। হুগলির তিন পর্যটককে নিয়ে ঘটে যাওয়া পরিস্থিতি এড়াতে জেলায় বন বাংলো, রিসর্ট, হোম স্টে বা হোটেলে থাকা পর্যটকদের করোনা পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। আর তাতেই মাথায় হাত পর্যটন ব্যবসায়ীদের। তবে গোটা পরিস্থিতির জন্য হুগলির তিন পর্যটককেই অবশ্য দায়ী করছেন তাঁরা।
আলিপুরদুয়ার জেলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে পর্যটন ব্যবসা আবার আগের জায়গায় ফিরে আসছিল। কিন্তু কয়েক জন পর্যটকের কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণের জন্য আমাদের আবার পথে বসার জোগাড়। ডুয়ার্স ঘুরতে এলে আবার করোনা পরীক্ষা করতে হবে, এমন ভেবেই তো পর্যটকেরা এখন আর কেউ এখানে আসতে চাইবেন না।’’
একইসঙ্গে তিনি জানান, এখন থেকে বুকিং নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের সংগঠনের অধীনে থাকা রিসর্টগুলি পর্যটকদের ‘ট্র্যাভেল হিস্টরি’ আগে জানবে। বিদেশ যোগ বা নতুন স্ট্রেনের প্রকোপ ছড়িয়েছে এমন কোনও জায়গার পর্যটকের ক্ষেত্রে বুকিং না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আলিপুরদুয়ার জেলার সিএমওএইচ গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘জেলায় করোনা পরিস্থিতি এখন বেশ খানিকটা নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে। এখন বাইরের লোকের থেকে জেলায় তা আবার ছড়িয়ে পড়লে সমস্যা বাড়বে। সে জন্যই সকলের নিরাপদ থাকার কথা ভেবে পর্যটকদেরও যাতে করোনা পরীক্ষা করা যায়, সে কথা ভাবা হয়েছে। পর্যটকদের ঘোরাফেরায় কোনও ব্যাঘাত ঘটানো স্বাস্থ্য দফতরের উদ্দেশ্য নয়।’’