চক্রধরপুরে দুর্ঘটনার মুখে হাওড়া-মুম্বই এক্সপ্রেস। ছবি: পিটিআই।
ক্যানসারে আক্রান্ত স্ত্রী। তাঁর চিকিৎসার জন্য স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে মুম্বই যাচ্ছিলেন বৃদ্ধ স্বামী। দু’জনে হাওড়া-মুম্বই এক্সপ্রেসে চেপেছিলেন। মঙ্গলবার সকালে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে সেই ট্রেন। দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মালদহের ইংরেজবাজার কৃষ্ণপল্লির বাসিন্দা বাদল দাস এবং তাঁর স্ত্রী সবিতা দাস।
সবিতাকে মুম্বইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন বাদল। হাওড়া থেকে দু’জনে ট্রেন ধরেন। শীততাপ-নিয়ন্ত্রিত সংরক্ষিত বি৪ কামরায় আসন ছিল তাঁদের। ঝাড়খণ্ডের চক্রধরপুরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সেই ট্রেন। লাইনচ্যুত হয় ১৮টি কামরা। সেই ট্রেনেই ছিলেন মালদহের বাদল এবং তাঁর স্ত্রী সবিতা। দু’জনেই গুরুতর জখম। ফোনে বাদল বলেন, ‘‘আমার পায়ে চোট লেগেছে, হাঁটতে পারছি না। স্ত্রীর মাথায় লেগেছে। আমরা স্থানীয় রেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি।’’ মালদহের বাড়িতে তাঁদের মেয়ে একা রয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসনের লোক জন তাঁদের বাড়িতে গিয়েছিলেন।
দুর্ঘটনার সময় ঠিক কী হয়েছিল, তা-ও জানান বাদল। তাঁর কথায়, ‘‘আচমকা বিকট শব্দ হয়। তার পর ঝাঁকুনি দেয়। ট্রেনের নীচের আসনে ছিলাম। মাঝের আসন ভেঙে পায়ের উপর পড়ে যায়।’’ বাদল জানিয়েছেন, আটকে থাকা পা বার করতে পারছিলেন না তিনি। পরে উদ্ধারকারীরা এসে তাঁদের উদ্ধার করেন। তাঁর স্ত্রীও মাথায় আঘাত পেয়েছেন। দু’জনকে স্থানীয় রেল হাসপাতালে নিয়ে যান উদ্ধারকারীর।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার কবলে পড়া হাওড়া-মুম্বই এক্সপ্রেসে মালদহের আরও চার জন ছিলেন। চার জনই কাজের জন্য মুম্বইয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁদের মধ্যে তিন জন মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকের লক্ষ্মীঘাট এলাকার বাসিন্দা। তাঁদের নাম জামশেদ আলি, সৌরভ আলি এবং কাদির শেখ। চাঁচলের বাসিন্দা রাজু শেখও ছিলেন ট্রেনে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর কোমরে গুরুতর লেগেছে। চার জনই স্থানীয় রেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ট্রেন দুর্ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।