Coronvirus in North Bengal

নিয়ম মেনে চলুন, গ্রাম দাপিয়ে বার্তা দিচ্ছেন টুম্পা

তাঁর বাবা দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন। তাঁর বড়ভাই কাজের খোঁজে জয়পুরে রয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২০ ০৮:২৭
Share:

টুম্পা রায়। নিজস্ব চিত্র

সকাল হলেই বেরিয়ে পড়েন মেয়েটি। খোঁজ নেন, গ্রামের কারও কি জ্বর-সর্দি-কাশি আছে? ভিন রাজ্য থেকে কেউ ফিরল? হোম কোয়রান্টিনে থাকার নির্দেশ ভেঙে কেউ কি বাজারে ঘুরছেন? ইতিউতি খোঁজ নিয়ে তিনি পৌঁছন বাজারে। কখনও ব্যাঙ্কের সামনে, কখনও বাজারে আনাজের দোকানের সামনেও দাঁড়িয়ে থাকা ক্রেতাদের সামাজিক দূরত্ব মানার অনুরোধ করেন। কেউ কেউ অবশ্য টুম্পাকে প্রশ্ন করেন, আপনি কে? তবে এসব শুনে ঘাবড়ে যাওয়ার পাত্রী তিনি মোটেও নন। পাল্টা দাপটে জানিয়ে দেন, “আইনটাকে মেনে চলুন।”

Advertisement

তিনি টুম্পা রায়। গ্রামীণ সম্পদ-কর্মী। বাড়ি কোচবিহারের চান্দামারি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঁঠালবাড়ি গ্রামে। তাঁর কথায়, “আসলে আমাদের কোনও নির্দিষ্ট পোশাক নেই। তাই অনেকেই চিনতে পারেন না। তাই আমাদেরও অনেক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। কথার মধ্যে দিয়েই সেসব কাটিয়ে আসল কাজটা করার চেষ্টা করি।” তিনি জানান, তাঁদের নিয়মিত গ্রামের নানা তথ্য ব্লক অফিসে পাঠাতে হয়। টুম্পা কানপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর করেছেন। ভাল ছাত্রী হিসেবে তাঁর নাম রয়েছে গোটা এলাকায়। শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন আছে তাঁর। সেজন্য এখন বিএড করছেন।

তাঁর বাবা দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন। তাঁর বড়ভাই কাজের খোঁজে জয়পুরে রয়েছেন। তাই তিনিও ২০১৬ সালে গ্রামীণ সম্পদ কর্মীর কাজে যোগ দেন। গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে সোশ্যাল অডিটের কাজই প্রথমটায় করতে দেওয়া হত তাঁদের। তার পতঙ্গবাহী রোগ নিয়েও কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এবারে করোনাভাইরাসের প্রকোপ নিয়েও একই ভাবে কাজের নির্দেশ এসেছে। তিনি নেমেও পড়েছেন।

Advertisement

টুম্পা বলেন, “অনেক কষ্ট করে আমাদের চলতে হয়। তারপরেও মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। সবাই মিলে যাতে ভাল থাকি, তাই প্রতিদিন সবাইকে সতর্ক করি। সরকার যদি আমাদের কথা একটু ভাবে ভাল হয়। অন্তত জীবনবিমার সুবিধাটুকু যদি পাওয়া যায়।” কোচবিহার জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “সরকারি নিয়ম মেনেই গ্রামীণ সম্পদ কর্মীরা কাজ করেন। তাঁদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement