চলে যাচ্ছে আধিকারিকের গাড়ি, দাঁড়িয়ে শ্রমিকরা। নিজস্ব চিত্র
কখনও হেঁটে, কখনওবা লরিতে চেপে পেরিয়ে এসেছেন ৩০০ কিলোমিটার পথ। মালদহের ওই শ্রমিকরা জানালেন, পথে সাহায্য পেয়েছেন ভিন্ রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনেরও। কিন্তু রাজ্যে ঢোকার পর আর কেউ সাহায্য করছে না বলেই অভিযোগ তাঁদের। এমনকি নীলবাতি লাগানো প্রশাসনের এক আধিকারিকের গাড়ি পাশ কাটিয়ে গেলেও তাঁদের দিকে ফিরেও তাকায়নি কেউ—ক্ষোভ তাঁদের।
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে লকডাউন চলছে। কাজ বন্ধ। খাবার শেষ। বন্ধ হয়ে রয়েছে যানবাহন। অগত্যা রবিবার দিন বিহারের মুজাফফরপুর থেকে পায়ে হেঁটেই রওনা দেন মালদহের ফিরোজ আলম, হেমন্ত রায়, বাবলু রহমানদের মতো ১৪ জন শ্রমিক। পথে বিহারের পুলিশ প্রশাসন কখনও বাসে কখনও লরিতে তুলে দেন। শেষে মঙ্গলবার তাঁরা রাজ্যের সীমানায় প্রবেশ করেন, পৌঁছন উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘিতে।
বাবলুরা জানালেন, তাঁরা মুজফফরপুরে নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। লকডাউনে কাজ হয়নি, টাকাও শেষ। তাই মাস শেষ হতেই বাড়ির মালিক বার করে দেয়। তখন বাধ্য হয়েই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন তাঁরা, মঙ্গলবার পৌঁছন করণদিঘিতে। কিন্তু মালদহ যেতে এখনও ১০০ কিলোমিটার পথ বাকি। সেই পথ পেরতেই সমস্যায় ওঁরা, জানালেন, ‘‘শরীর আর চলছে না।’’ তাঁদের ক্ষোভ, প্রশাসনও সাহায্য করছে না।
তাঁরা জানালেন, ডালখোলা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে হাঁটতে হাঁটতে একাধিক জায়গায় লরি আটকানোর চেষ্টা করলেও একটিও লরি দাঁড়ায়নি। ক্লান্ত হয়ে পড়লে করণদিঘিতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের মাঝখানে অবরোধে বসে পড়েন। কিন্তু কোনও লরি বা ট্রাকই তাঁদের সাহায্য করেনি। তাঁদের দাবি, এমনকি সে সময় জেলা প্রশাসনের এক কর্তার গাড়ি পাশ দিয়ে গেলেও ওই শ্রমিকদের দিকে কেউ ফিরেও তাকায়নি বলে অভিযোগ। ফিরোজ বলেন, ‘‘মুড়ি খেয়ে আছি। আর পারছি না। বাকি রাস্তা কী ভাবে যাব জানি না।’’
পথ চলতে চলতে ক্লান্ত হেমন্ত বলেন, ‘‘বিহারে পুলিশ প্রশাসন আমাদের তবু সাহায্য করেছে। কিন্তু এখানে তো সে সব কিছুই পেলাম না।’’ অগত্যা ফের পথে নেমেছেন ওঁরা।
জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনাকে মেসেজ এবং ফোন করলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।