ক্ষুব্ধ: হরিশ্চন্দ্রপুরে কোয়রান্টিন কেন্দ্রে বিক্ষোভ শ্রমিকদের। নিজস্ব চিত্র
প্লাস্টিকে দেওয়া খাবার থেকে গন্ধ বার হচ্ছিল। তা নিয়ে প্রতিবাদ করতেই কপালে জুটল মার, এমনই অভিযোগ উঠল হরিশ্চন্দ্রপুরের আইটিআই কলেজের কোয়রান্টিন কেন্দ্রে। ঘটনায় যারপরনাই ক্ষুব্ধ আবাসিকরা। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘আমরা তো কোনও অপরাধ করিনি, তা হলে কেন এ রকম ব্যবহার করা হচ্ছে!’’
প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করতে প্রচার চালাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর, প্রশাসন। অথচ হাসপাতালের ক্যান্টিন থেকে কোয়রান্টিন সেন্টারে রান্না করা ভাত, ডাল, আনাজ দেওয়া হচ্ছে ক্যারিব্যাগেই। আবাসিকরা জানালেন, তার উপর দীর্ঘক্ষণ ক্যারিব্যাগে ওই খাবার থাকায় তা গন্ধে খাওয়া যাচ্ছে না। তা নিয়ে সরব হন আবাসিকরা। আর তার পরই খাবার সরবরাহকারীরা তাঁদের মারধর করেন বলে জানান তাঁরা। ক্যারিব্যাগে খাবার দেওয়ার বিষয়টি জেনে ক্ষুব্ধ বিডিও-ও। রাতেই কেন্দ্রে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শনিবার থেকে শ্রমিকদের ফয়েল প্যাকে খাবার দিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। পাশাপাশি শ্রমিককে মারধরের অভিযোগও খতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু বলেন, ‘‘আজ থেকে ফয়েল প্যাকে খাবার দিতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর আজ খাবার দেওয়ার সময় পুলিশ থাকবে। তারাই খাবারের মান খতিয়ে দেখবে।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, আইটিআই কোয়রান্টিন কেন্দ্রে আপাতত ৪২ জন শ্রমিক রয়েছেন। ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা ওই শ্রমিকদের মধ্যে স্থানীয়দের পাশাপাশি লাগোয়া বিহারেরও কিছু শ্রমিক রয়েছেন। হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালের ক্যান্টিন চালান যাঁরা, তাঁরাই কেন্দ্রে খাবার সরবরাহের বরাত পেয়েছেন। সেখান থেকে দু’বেলা খাবার সরবরাহের পাশাপাশি সকালে চা, মুড়িও দেওয়া হচ্ছে। শ্রমিকদের অভিযোগ, দুপুরের সঙ্গে রাতের খাবারও ক্যারিব্যাগে ভরে ফেলা হচ্ছে। শুক্রবার আবার বেশি রাতে খাবার দেওয়া হয়। ওই খাবার থেকে গন্ধ বার হচ্ছিল। এক শ্রমিক প্রতিবাদ জানিয়ে প্যাকেট ছুঁড়ে ফেলতেই তাঁকে টেনে বাইরে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয় বলে জানালেন তাঁরা। ঘটনার জেরে প্রবল উত্তেজনা তৈরি হয়। দরজা ভেঙে বাইরে আসার চেষ্টা করেন শ্রমিকরা। পরে বিডিওর নির্দেশে পুলিশ গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
শ্রমিক নৌসাদ আলি, রঞ্জিত গোস্বামীরা জানান, তাঁদের তো বেশি দাবি নেই, কিন্তু তা বলে পচা খাবার দেওয়া হবে? প্রতিবাদ করলে আবার মার খেতে হচ্ছে। নৌশাদের কথায়, ‘‘আমরা তো কোনও অপরাধ করিনি, তা হলে আমাদের সঙ্গে কেন এ রকম ব্যবহার করা হচ্ছে?’’