অনবগত: লকডাউন অমান্য করে বাইপাস লাগোয়া জলেশ্বরী মাছের বাজারে রবিবারের ভিড় উপচে পড়েছে। ছবি: স্বরূপ সরকার
একেবারে তাজা তো বটেই, কোনও কোনওটা আবার জ্যান্ত। সেই রুই, কাতলা, পোনা, বাটা, তেলাপিয়া, চিংড়ি বা বোরোলির লোভে লকডাউনের নির্দেশ ভুলে গেল বাঙালি। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে শহরের বেশিরভাগ বড় বাজার, হাট রবিবার বন্ধ থাকছে। তাই এবার ভিড় উপচে পড়ল বাইপাস লাগোয়া জলেশ্বরী বাজারে। বরাবর এই বাজার তাজা এবং জ্যান্ত মাছের জন্য জনপ্রিয়। সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক কোনও কিছুই মানা হল না ঠিকঠাক। সরকারি নির্দেশ ভুলে শুধু চলল মাছ কেনাবেচা। রবিবার বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ছবি দেখে আঁতকে উঠলে শহরবাসী।
তাঁরা জানাচ্ছেন, লকডাউন শুরু হতেই রবিবাসরীয় বাজারের ভিড় উপচে পড়ছিল বাজারগুলিতে। হায়দারপাড়া, সুভাষপল্লি, ফুলেশ্বরী, ক্ষুদিরামপল্লি, উড়ালপুলের নীচের বাজার, ঝংকার মোড় বাজার বা চম্পসারি বাজার- কোনওটাই লকডাউনের প্রথম দিকের রবিবারে দেখে মনে হয়নি, শিলিগুড়ি অরেঞ্জ জ়োনের মধ্যে রয়েছে। একদল বাড়ির বাইরে বার প্রায় প্রতিদিনই হয়ে মাছ, মাংস, ডিম বা আনাজ না কিনলে চলছিল না। শেষে পুলিশ ময়দানে নামে। পুলিশ কমিশনার ত্রিপুরারি অথর্ব বিভিন্ন বাজারে ঘুরে রবিবারের একাংশ হাট বাজার বন্ধের নির্দেশ দেন। সপ্তাহের বাকি দিনে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। এতে পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে। তাই শহরের ভিতরের বাজারের বদলে রবিবার হলেই লোকজন ভিড় করছেন জলেশ্বরী বাজারের মত এলাকায়।
পুলিশ কমিশনার বলেছেন, মানুষকে সচেতন হতে হবে। নইলে তো সব সময় কড়াকড়ি করে সমস্যা মিটবে না। এরমধ্যে শনিবার শিলিগুড়ি শহরের বিভিন্ন বাজারে মানুষের ভিড় এড়িয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাজারগুলি খোলা রাখার ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসনের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। বৃহত্তর শিলিগুড়ি খুচরা ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এনজেপি গেটবাজার প্রতি রবিবার বন্ধ থাকলেও এখন থেকে কেবলমাত্র মাছ ও মাংসের দোকান খোলা থাকবে। ঘোগোমালি বাজারে রবিবার মাছ, আনাজ ও ফল বন্ধ থাকবে, কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য এবং মাংসের দোকান খোলা থাকবে।
এর আগে প্রধাননগর থানা এলাকার সমস্ত দোকান দুপুর ১২টার মধ্যে বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এবার থেকে ওই এলাকার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানগুলি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। কিন্তু চম্পাসারি বাজার আগের নিয়ম অনুসারেই দুপুর ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব রায় মুহুরি জানান, রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা অনুসারে এখনও বিভিন্ন মার্কেট এবং অন্য বাজারগুলি খোলা হচ্ছে না। পাড়ার বা রাস্তার ধারে অবস্থিত ওই ধরনের একক দোকানগুলি খুলেছে। তবে সবক্ষেত্রেই স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি প্রয়োজন।