Coronavirus Lockdown

কতটা পথ পেরোলে...

এই শ্রমিকদের বেশিরভাগই বিহারের দ্বারভাঙা ও আরও কয়েকটি এলাকায় ইটভাটার কাজে গিয়েছিলেন।

Advertisement

নীতেশ বর্মণ

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২০ ০৮:৫২
Share:

ফেরা: ঘরে ফেরার পথে। বিশ্রাম ফুলবাড়ি এলাকার একটি চেকপোস্টে। নিজস্ব চিত্র

কাজের সূত্রে বিহারে ছিলেন তাঁরা। লকডাউনের ফলে দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ কাজ। ফুরিয়ে গিয়েছে জমানো টাকাও, খাবারও নেই। এই পরিস্থিতিতে স্রেফ বাঁচার তাগিদে পায়ে হেঁটেই ঘরে ফিরছিলেন কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা ওই শ্রমিকরা। শিলিগুড়ি মহকুমা প্রশাসন সূত্রে বলা হয়েছে, বিহার থেকে এ রাজ্যে ঢুকে খড়িবাড়ি এবং নকশালবাড়ির বিভিন্ন এলাকা দিয়ে হেঁটে ঘরে ফেরার চেষ্টা করছিলেন ওই শ্রমিকরা। তাঁদের আপাতত মহকুমা এলাকার কয়েকটি জায়গায় রাখা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, বাসে বা গাড়িতে করে তাঁদের বাড়ি পৌঁছনোর ব্যবস্থা করা হবে।

Advertisement

সোমবার ফুলবাড়ি, বিধাননগর এবং খড়িবাড়িতে ৩৫০ জনের মতো শ্রমিককে রাখা হয়েছে। তাঁদের কারও বাড়ি দিনহাটায়, কারও সিতাই, শীতলকুচিতে। শিলিগুড়ি মহকুমা শাসক সুমন্ত সহায় জানান, প্রত্যেকদিন ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকরা ঢুকছেন। তাঁরা যাতে পায়ে হেঁটে বাড়ি না যান সেজন্য প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে। এ দিন যারা এসেছেন তাঁদের তিন জায়গায় রাখা হয়েছে। খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকদের সংস্পর্শে যাতে স্থানীয়রা না যান সেজন্য শ্রমিকদের কোয়রান্টিনে রাখা হচ্ছে। সেখান থেকে তাঁদের ঘরে ফেরাতে ব্যবস্থা নিচ্ছি আমরা।’’

এই শ্রমিকদের বেশিরভাগই বিহারের দ্বারভাঙা ও আরও কয়েকটি এলাকায় ইটভাটার কাজে গিয়েছিলেন। লকডাউন শুরু হওয়ার পরে কাজ বন্ধ হয়েছে। অনেক জায়গায় ইটভাটা কর্তৃপক্ষ খাবার দেওয়া বন্ধ করেছেন বলে অভিযোগ। উপায় না দেখে বাড়ি ফেরা শুরু করেছিলেন তাঁরা।

Advertisement

ঘোষপুকুরের একটি স্কুলে রাখা হয়েছে কিছু শ্রমিককে। সেখানে থাকা এক শ্রমিক মহম্মদ সাহিদুল বলেন, ‘‘টাকা ছিল না। খাবার না পেয়ে বাচ্চারা কাঁদছিল। বাধ্য হয়ে হেঁটেই ফেরার চেষ্টা করছিলাম। দুই রাত পায়ে হেঁটে চলেছি। অনেকে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন। প্রশাসন বাসে করে ফেরাতে চেয়েছে। সেটা না হলে আবার হেঁটেই বাড়ি ফিরতে হবে।’’

খড়িবাড়িতে কয়েকশো শ্রমিক আটকে পড়েছেন। ওই এলাকা দিয়েই বিহার থেকে বেশি সংখ্যক শ্রমিক এলাকায় ঢুকছে বলে সেখানকার পঞ্চায়ত সমিতির সভাপতি বাদল সরকার জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। ভিন রাজ্যের শ্রমিকরা এলাকায় ঢুকলেই প্রশাসনকে জানিয়ে কোয়রান্টিনে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’

স্থানীয়দের অভিযোগ, শ্রমিকরা জনশূন্য, সরু রাস্তা দিয়ে এ রাজ্যে ঢুকছেন। অনেক সময় সীমানার রাস্তা দিয়ে ঢুকলেও তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে না। যার ফলে ওই শ্রমিকদের কারও সংক্রমণ হয়ে থাকলে তা বোঝা যাবে না বলে দাবি বাসিন্দাদের একাংশের। এলাকার বাসিন্দাদের সুরক্ষার জন্যই ওই শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা প্রয়োজন বলে দাবি করেছেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement