প্রতীকী ছবি
চায়ের বাজারে এপ্রিল মাসের কদর বরাবর। এই সময় তোলা চায়ের দাম এবং চাহিদা সর্বাধিক। প্রথম ফ্লাশের ক্ষেত্রেও চা বিশেষজ্ঞদের অনেকেই শুধু এপ্রিল মাসে তোলা চা পাতা খুঁজে থাকেন। এই মাসেই আর্ন্তজাতিক চা দিবস পালন করা হয়। করোনা সংক্রমণের জেরে এ বছর এপ্রিল মাসে চা পাতা আর তোলা যাবে কিনা, সেই প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গ! গত সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে দাঁড়িয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার ছাড় দিলেও রাজ্যে আপাতত চা বাগান খুলছে না। এই সিদ্ধান্তকে চা শ্রমিকদের যৌথ মঞ্চ সমর্থন করেছে। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিনয় তামাং প্রেস বিবৃতি জারি করে মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন। এর আগে বিজেপির দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তাও চা বাগান খোলা রাখার অনুমতি খারিজ করতে কেন্দ্রকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন।
এই সিদ্ধান্তকে পুর্নবিবেচনার দাবি জানিয়েছেন চা বাগাম মালিকেরা। দেশে চা বাগান মালিকদের একাধিক সংগঠন রয়েছে। সব ক’টি সংগঠনকে নিয়ে গঠিত কমিটি কনসালটেটিভ কমিটি অব প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক অমিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েই পুর্নবিবেচনার আবেদন জানাচ্ছি। শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসুরক্ষা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে চা গাছগুলিকেও বাঁচিয়ে রাখা জরুরি।” আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন চলার কথা। কিন্তু তার পরেও সব কিছু স্বাভাবিক হবে কিনা, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে চা বাগানের কী হবে তা নিয়েও সংসয় তৈরি হয়েছে। ক্ষুদ্র চা বাগানগুলির সর্বভারতীয় সংগঠনের সভাপতকি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “অনেকেই ফোন করে জানতে চাইছেন, এই মরসুমে আর চা বাগান খুলবে কিনা! কেউ কেউ এখনই চা গাছের অর্ধেকটাই কেটে ফেলতে চাইছে। খুব কঠিন সময়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে চা শিল্প।”
গত বছর রাজ্যে মোট চা উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ৩৯৪০ লক্ষ কেজি চা। মার্চ এবং এপ্রিল মাসে বছরের মোট উৎপাদিত চায়ের প্রায় ত্রিশ শতাংশ তোলা হয়। মঙ্গলবার জলপাইগুড়িতে প্রশাসনিক বৈঠকে চা বাগান প্রসঙ্গ আসে। চা শ্রমিকদের রেশন চালু হয়েছে। চা শ্রমিকদের প্রতি পরিবারকে মাসে ৩৫ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। এ দিন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “চা শ্রমিকদের খাবারের কোনও অভাব হবে না। রেশন দেওয়া হচ্ছে, তার বাইরেও খাদ্যশস্য দেওয়া-সহ সরকারি নানা প্রকল্পে সুবিধে বিলি করা হবে তাঁদের মধ্যে।”
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)