প্রতীকী ছবি
ছোটবেলায় সহজপাঠে পড়েছিলাম, আজ মঙ্গলবার, জঙ্গল সাফ করার দিন। লকডাউনে কী মঙ্গল আর কী বুধ! বাড়ির পিছনে যে জঙ্গল জমে রয়েছে, কয়েক দিন ধরে সেটাই সাফ করছি এখন। দোকান একটা আছে বটে। কিন্তু জলপাইগুড়ির বাবুপাড়ার মোড়ে আমার সেই ছোট পানের দোকানটা লকডাউন ঘোষণা হতেই বন্ধ। কয়েক দিন আগে ভেবেছিলাম, বিকেলে একটু দোকান খুলব। কিন্তু পুলিশের টহল দেখে বাড়ি চলে এসেছি।
এখন বাড়িতেই থাকি সারাদিন। কখনও টিভিতে সিনেমা দেখি, কখনও খবর। মাঝে জঙ্গলও সাফ করছি। কিন্তু এই ভাবে কত দিন চলবে? বাড়িতে বয়স্ক বাবা, মা ও দাদা আছে। ১৯ বছর ধরে ওই দোকান করেই সংসার চালাচ্ছি। এ বারে লকডাউনে যেন আর দিন চলে না। হাতের টাকা প্রায় সব শেষ। এর পরে যে কী করে দিন চলবে, কে জানে!
চাল, ডাল সবই শেষ। এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দু’কেজি চাল দিয়েছিল। তা-ও ফুরিয়েছে। এ দিকে বয়স্ক মা-বাবার ওষুধ কিনতে প্রচুর টাকা লাগে। ব্যবসার পুঁজির সব টাকা শেষ হয়ে গিয়েছে। লকডাউনের পরে দোকান খুলতে পারলেও সেখানকার জিনিস কেনার জন্য টাকা কোথায় পাব, জানি না।
আমার পানের দোকানে কিন্তু আইসক্রিম, লস্যি ও প্যাকেটের বিভিন্ন খাবার পাওয়া যায়। অনেক খাবার মজুত করা আছে। তার মধ্যে বেশ কিছু নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। বিশেষ করে আইসক্রিম আর লস্যি। তিন সপ্তাহ ধরে দোকান বন্ধ, নষ্ট হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।
বাড়িতে থাকতে থাকতে ধৈর্যও আর ধরে রাখতে পারছি না। কিন্তু উপায় নেই। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে সরকারের লকডাইনের সিদ্ধান্ত মেনে চলতেই হবে। সরকারি সাহায্য পেলে খুব তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক হবে আমার সংসার। না হলে এই ঘাটতি কবে, কীভাবে পূরণ হবে, কে জানে!