প্রতীকী ছবি
গড়ে পিছিয়ে থাকলেও, একশো দিনের কাজ শুরুতে তাড়াহুড়ো করতে রাজি নয় জলপাইগুড়ি জেলা। করোনা সংক্রমণ শুরুর পরে সরকারি হিসেবে জলপাইগুড়ি জেলায় দশ হাজারেরও বেশি পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন। বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যাটা তিনগুণ। শ্রমিকদের বড় অংশকে চিহ্নিত করে বাড়িতেই কোয়রান্টিনে থাকার কথা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেটা কতটা মানা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশাসনের অন্দরেও সংশয় রয়েছে। ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা বিপুল সংখ্যক বাসিন্দার ‘চাপ’ থাকায় এখনই একসঙ্গে একশো দিনের প্রকল্পগুলির কাজ শুরু করে দিলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না কেউই। তাই জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত, ধাপে ধাপে একশো দিনের কাজে জোর দেওয়া হবে।
গত সোমবার থেকে কেন্দ্রীয় সরকার একশো দিনের কাজকে লকডাউনের আওতা ছাড় দিলেও জেলার সব ব্লকে কাজ শুরু করা হয়নি। যে যে ব্লকে কাজ শুরু হয়েছে সেখানেও দু’টির বেশি প্রকল্পের কাজ একসঙ্গে না করার পরামর্শ পাঠানো হয়েছে জেলা থেকে।
জলপাইগুড়ির জেলাশাসক অভিষেক তিওয়ারি বলেন, “একশো দিনের কাজ শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে কাজের গতি বাড়ানো হবে। ব্লকগুলিকে বলা হয়েছে যথসম্ভব কম শ্রমিকদের কাজে লাগিয়ে প্রকল্প চালাতে হবে। সামাজিক দূরত্বের বিধি কঠোর ভাবে মানতে হবে।”
জেলা থেকে গ্রামে গ্রামে নির্দেশ গিয়েছে কোনও প্রকল্পেই দশ জনের বেশি শ্রমিককে কাজ দেওয়া যাবে না। শুরুতে মূলত সেচ খাল কাটা এবং বাংলার আবাস যোজনায় পাওয়া ঘরের ভিত তৈরির কাজ হবে। প্রশাসনের সূত্র অনুযায়ী জলপাইগুড়ির ৮০টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কাজ হবে। এখন সব গ্রাম পঞ্চায়েত মিলিয়ে পাঁচশো জন শ্রমিক কাজ করছেন। এর সঙ্গে রয়েছে বাংলার আবাস যোজনা প্রকল্পে হাজারখানেকের বেশি শ্রমিক। কম শ্রমিক কাজে লাগালে কাজের গতি শ্লথ হবে, সবাই কাজও পাবেন না। নীতিগত কারণেই এই সমস্যাগুলির মুখোমুখি হতে রাজি প্রশাসন।
জলপাইগুড়ি জেলা একশো দিনের কাজে পিছিয়ে ছিল মরসুমের প্রথম থেকেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুজোর পরে প্রশাসনিক বৈঠকে এসে, জলপাইগুড়িতে কাজের গতি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। গত বছরের শেষ থেকে কাজে গতি এসেছিল। করোনা সংক্রমণের ধাক্কায় ফের এই প্রকল্পে পিছিয়ে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা আধিকারিকদের একাংশের। যদিও করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা থাকায় একশো দিনের কাজ নিয়ে ঝুঁকি নিতে রাজি নয় প্রশাসন।