শিলিগুড়ির ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ব্যারিকেড টপকে এ ভাবেই যাতায়াত। —নিজস্ব চিত্র
করোনা সংক্রমণ ছড়ানো রুখতে যৌথভাবে মাঠে নামল শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসক বোর্ড এবং প্রশাসন। সূত্রের খবর, দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংক্রমণের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে প্রাথমিকভাবে বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে বস্তি, কলোনি রয়েছে এমন ১০টি ওয়ার্ডে। দ্বিতীয় দফায় বাছাই করা হচ্ছে আরও ১০টি ওয়ার্ড। বাড়তি নজরদারির সঙ্গে সঙ্গে কোথাও সংক্রমণ ধরা পড়তেই কী কী করনীয় তার রূপরেখা তৈরি হয়েছে। গত এক মাসে মুম্বই বা দিল্লির বস্তি-কলোনিতে সংক্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে আগেভাগেই সতর্ক থাকার চেষ্টা করা হচ্ছে। বাকি ওয়ার্ডগুলিতেও নজর রাখা হবে। সাম্প্রতিককালে বাইরে থেকে যারা শহরে এসেছেন, তাঁদের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য হাতে রেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে।
বুধবার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন অশোক ভট্টাচার্য দার্জিলিঙের জেলাশাসক এস পুন্নমবলমের সঙ্গে কথা বলেছেন। দুই তরফে আলোচনা করে প্রশাসন শহরের করোনা মোকাবিলার জন্য একটি গাইডলাইন চূড়ান্ত করতে চলেছে। অশোক বলেন, ‘‘এই সময়টা চূড়ান্ত সতকর্তার সময়। শহরের একেবারে ভিতরে দু’টি ওয়ার্ড মিলিয়ে ৩ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। একটা গাইডলাইন তৈরি হয়েছে। জেলাশাসকের কিছু মতামত, বিষয় রয়েছে। পুর কমিশনার কথা বলছেন। দ্রুত তা চূড়ান্ত হয়ে যাবে।’’ তিনি জানান, করোনা সংক্রমণ যাতে না ছড়ায় তার জন্য সকলের প্রয়োজনীয় সতর্কতা এবং সচেতনতা মেনে চলা উচিত।
প্রশাসন এবং পুরসভা সূত্রের খবর, পুর এলাকায় ১৫৪টি বস্তি রয়েছে। এরমধ্যে ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ২৮, ৩৪, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডগুলিতে বস্তি বা কলোনি রয়েছে। মুম্বইয়ের ধারাভি বা কলকাতার বেলগাছিয়া এলাকায় দেখা গিয়েছে, বস্তি বা কলোনিতে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে তা দ্রুত ছড়ায়। সম্প্রতি যে ফল বিক্রেতা এবং তাঁর ছেলে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁরা শিলিগুড়ি ৬ নম্বর ওয়ার্ডের এমনই একটি কলোনি এলাকায় থাকেন। ওই এলাকার আশেপাশেও অন্তত ৫টি বস্তি এলাকা রয়েছে। তাই বস্তি, কলোনিতে আগাম নজরদারি শুরু হয়েছে। স্যানিটাইজ়েশন, সাফাই অভিযানও হচ্ছে।
গাইডলাইনে ঠিক হয়েছে কোথাও সংক্রমণ ধরা পড়লে প্রথমেই এলাকায় এক দফায় স্যানিটাইজ়েশন করার পরে একদিন অন্তর স্যানিটাইজ়েশন করা হবে। এলাকা চিহ্নিত করে বাঁশ, লোহার ব্যারিকেড বসানো হবে। ওই এলাকার লোকেদের প্রতিদিন রেশন পৌঁছনো, পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হবে। র্যাপিড টেস্টের ব্যবস্থা করা হবে বলেও প্রশাসন সূত্রে খবর। এ ছাড়া ওই এলাকায় কাজ করা সাফাই কর্মী এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের
পিপিই কিট দেওয়া হবে। যাঁরা এখন কোঅর্ডিনেটর হয়েছেন, তাঁরা ফোননম্বর সংগ্রহ করে আক্রান্ত এলাকার লোকজনের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলবেন। এ ছাড়া আলাদা কয়েকটি অ্যাম্বুল্যান্স, শববহনের গাডি, বাসিন্দাদের যোগাযোগের জন্য হেল্পলাইন নম্বর থাকবে।
শিলিগুড়ির মহকুমা শাসক সুমন্ত সহায় বলেন, ‘‘শহরকে সুরক্ষিত রাখতে যা যা করণীয় তা করা হচ্ছে। তবে বাসিন্দাদেরই সচেতন হতে হবে।’’