Coronavirus in West Bengal

কেউ নব্বই, কেউ আশি, মনের জোরেই করোনা-জয়ী

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বয়সে ওই প্রবীণ ওই দু’জন ভর্তি হওয়ার পরেই তাঁদের ঠিক কী কী সমস্যা রয়েছে তা জানার চেষ্টা করেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২০ ০৫:৪৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

নব্বইয়েও তিনি হেরে যাওয়ার মানুষ নন। মনোবল শক্ত এই বয়সেও। করোনা পজ়িটিভ হওয়ার পরে বাড়িতেই চলেছে চিকিৎসা। দিন কয়েক পরে একটু অসুস্থতা বোধ করায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া কোভিড হাসপাতালে। বয়সের ভারে একটু নুব্জ হয়ে পড়লেও মনের জোরে অবিচল। তাঁর চোখের চাহনিতেই ঘুরে দাঁড়ানোর ছবি দেখেছিলেন চিকিৎসকেরা।

Advertisement

হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। চিকিৎসক থেকে চিকিৎসাকর্মী সবাই যেন জেগেই রাত কাটিয়েছেন। কখনও একটু সমস্যা হলে ব্যবস্থা নিয়েছেন সঙ্গে সঙ্গে। অবশেষে করোনাকে পরাজিত করে বৃদ্ধা বাড়ি ফিরেছেন। ছুটির দিন তাঁকে কুর্নিশ জানিয়েছে গোটা হাসপাতাল। তাঁর জয় করার এই গল্পই এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে কোভিড হাসপাতালের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে।

শুধু তিনি নন, আর একজন আশি বছরের বৃদ্ধাও একই ভাবে হার মানিয়েছেন করোনাকে। কোচবিহারের এই দুই মহিলা করোনাকে পরাজিত করে সুস্থ হয়ে উঠেছেন পুরোপুরি। কো-মর্বিডিটি থাকলেই করোনায় মৃত্যু, আশঙ্কার এমন মিথকেও ভেঙে দিয়েছেন ওঁরা। হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, “কো-মর্বিডিটি বলতে আমরা ঠিক যা বুঝি তেমনই নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন ওঁরা। এই বয়সে বার্ধক্যজনিত রোগ থাকবেই। তার পরেও ওঁদের মনোবল আমাদের সাহস জুগিয়েছে অনেক। আর ওষুধও কাজ দিয়েছে দ্রুত।”

Advertisement

নব্বই বছরের ওই বৃদ্ধার বাড়ি কোচবিহারের কলাবাগান এলাকায়। আর আশি বছরের বৃদ্ধার বাড়ি চকচকায়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষও কুর্নিশ জানিয়েছেন তাঁদের। তিনি বলেন, “ওই দু’জন তো বটেই, আরও বেশ কয়েকজন প্রবীণ মানুষ পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। হাসপাতালের চিকিৎসক-চিকিৎসাকর্মীরাও খুব ভাল কাজ করছেন।” কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ানও জানিয়েছেন, চিকিৎসক, নার্স থেকে চিকিৎসাকর্মীদের দিনরাত পরিশ্রমের জন্যেই ফল মিলছে।

শুরু থেকেই কোচবিহারের কোভিড হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে কোনও প্রশ্ন ছিল মানুষের মনে ছিল না। বিশেষ করে যাঁরা সেখানে ভর্তি হয়ে সেখান থেকে ফিরছিলেন, তাঁদের অনেকেই সেখানকার পরিষেবায় সন্তুষ্ট ছিলেন। প্রশ্ন ছিল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং চিকিৎসা পরিকাঠামো নিয়ে। কিন্তু এই দুটি ঘটনা অন্যরকম ছাপ ফেলেছে চিকিৎসক মহলে।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বয়সে ওই প্রবীণ ওই দু’জন ভর্তি হওয়ার পরেই তাঁদের ঠিক কী কী সমস্যা রয়েছে তা জানার চেষ্টা করেন তাঁরা। সেই সঙ্গে তাঁদের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে নিয়ে তাঁরা পরামর্শ করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে। ওষুধ পড়ার কয়েক ঘণ্টা পর থেকে সাড়া দিতে থাকেন দু’জনেই। এক চিকিৎসক বলেন, “চিকিৎসায় সাড়া দিতে শুরু করতেই আমরা বুঝে যাই, হার হয়েছে করোনার।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement