ভোগান্তি: মেঝেতেই পড়ে রয়েছেন করোনার সন্দেহভাজন রোগীরা। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে। ছবি: বিনোদ দাস।
কোভিড ওয়ার্ডের উদ্বোধন করা হল। তবে রোগী রাখা শুরু না হওয়ায় করিডরের মেঝেতেই পড়ে রয়েছেন করোনার সন্দেহভাজন রোগীরা। যাঁদের লালা পরীক্ষার পর অনেকের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসছে। গত তিন সপ্তাহ ধরে এটাই শিলিগুড়ি হাসপাতালের চিত্র। এক মাস আগে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ৫০ শয্যার কোভিড ওয়ার্ড চালুর কথা জানানো হয়েছিল। বাস্তবে তা এখনও চালু না হওয়ায় রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। বুধবারও শিলিগুড়ি হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডের সামনের করিডরের মেঝেতে জ্বর, কাশি নিয়ে অন্তত তিন জন সন্দেহভাজন করোনা রোগীরা রয়েছেন। একজনকে করিডরেই পাতা একটি শয্যাতে দেখা গিয়েছে।
এ দিনই শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন গৌতম দেব শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ২০ টি শয্যার নতুন কোভিড ওয়ার্ডটি উদ্বোধন করেন। তবে কিছু কাজ বাকি থাকায় এদিন থেকে রোগী রাখা সম্ভব হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তা দ্রুত করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে রোগীদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বর্তমানে মেল আইসোলেশন ওয়ার্ডের একদিকে কোভিড রোগীদের রাখতে হচ্ছে। সন্দেহভাজন রোগীদের আলাদা করে রাখার জায়গা নেই। তাই লাগোয়া করিডরের মেঝেতেই শয্যা করে দেওয়া হচ্ছে।
সম্প্রতি করোনা সন্দেহে বাবাকে শিলিগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি করার পর করিডরে এ ভাবে রেখে দেওয়ায় তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে পুরসভারই এক আধিকারিকের। পরে প্রশাসনের লোকদের ধরাধরি করে মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমে সরকারি শয্যার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হন। কিন্তু সকলের পক্ষে তা সম্ভব নয়। তাতে বাকি রোগীদের চরম দুর্ভোগের মধ্যে থাকতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। হাসপাতাল সুপার প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আপাতত ২০ টি শয্যা দিয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হল। কোভিড ওয়ার্ডটি প্রস্তুত করা হচ্ছে। আইসোলেশন ওয়ার্ডে থাকা করোনা রোগীদের ধীরে ধীরে নিয়ে যাওয়া হবে। করিডরে যে রোগীরা রয়েছেন তাঁদের যতটা সম্ভব ওয়ার্ডে জায়গা দেওয়া যাবে।’’
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা করোনা সন্দেহে আসা রোগীর চাপ বাড়ছে। যা পরিস্থিতি তাতে কোভিড ওয়ার্ডে ৫০ টি শয্যা চালু পরেও করিডরে রাখতে হবে। গত ১৯ এপ্রিল স্বাস্থ্য দফতরের উত্তরবঙ্গের দায়িত্বে থাকা ওএসডি সুশান্ত রায় শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ৫০ শয্যার কোভিড ওয়ার্ড চালুর নির্দেশ দিয়েছিলেন।
অন্যদিকে, শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে বহির্বিভাগে ফিভার ক্লিনিক অন্য পরিষেবার মধ্যে চলছে বলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন হাসপাতালের কর্মীদেরই একাংশ। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের সম্পাদক প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। ফিভার ক্লিনিক আলাদা জায়গায় না করলে অন্য রোগী এবং হাসপাতালের কর্মীদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।’’ কর্তৃপক্ষের দাবি, জায়গার সমস্যা রয়েছে।