রাতদিন রোগীর পাশে প্রস্তুত ওঁরা

কোচবিহার করোনা প্রকোপ শুরু হতেই কোভিড হাসপাতাল চালু করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২০ ০৫:১৯
Share:

প্রতীকী ছবি

দিনরাত ধরে যেন দু’চোখ সরছে না ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা থেকে। নিয়মমাফিক রাউন্ড তো চলছেই। তার পরেও কোনও সমস্যা চোখে পড়তেই ছুটছেন ওঁরা। সিসিইউয়ে নজরদারি চলছে দিনভর। কোচবিহার কোভিড হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের মিলিত নজরদারির ফল মিলেছে।

Advertisement

চিকিৎসকরাই জানিয়েছেন, অধিকাংশ রোগীকে সুস্থ করে বাড়ি পাঠাতে সমর্থ হয়েছেন ওঁরা। ওঁদের উপর আস্থা বাড়ছে মানুষের। এক চিকিৎসকের কথায়, “আমরা আমাদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছি। তার পরও কিছু খামতি থেকে যায়। চেষ্টা করছি সে সব খামতিও যেন না থাকে।” কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ান বলেন, “সবাই খুব ভাল কাজ করছেন। হাসপাতালে সুস্থতার হার খুব ভাল।”

কোচবিহার করোনা প্রকোপ শুরু হতেই কোভিড হাসপাতাল চালু করা হয়। প্রথমদিকে সন্দেহজনক রোগীদের সেখানে রাখা হত। কোভিড পজ়িটিভ হলেই তাঁকে শিলিগুড়িতে রেফার করা হত। পরের দিকে (জুন মাসের মাঝামাঝি) ওই হাসপাতালকে সম্পূর্ণ কোভিড হাসপাতালে উন্নীত করা হয়। সেই সময় থেকে আক্রান্তদের সেখানেই চিকিৎসা শুরু হয়। কোচবিহার কোভিড বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়েছে, বুধবার পর্যন্ত ওই হাসপাতালে ৫৮৫ জন রোগীকে ভর্তি করা হয়েছে। তার মধ্যে ৫৪৩ জন ছুটি পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত একজন আক্রান্ত মারা গিয়েছেন। রোগীদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে রেফার করা হয়েছে শিলিগুড়িতে। তার মধ্যে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। তা নিয়ে কিছু প্রশ্ন রয়েছে।

Advertisement

কীভাবে পরিষেবা মিলছে সেখানে? চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শারীরিক ও মানসিক দু’রকম চিকিৎসাই চলে সেখানে। ওষুধপত্র দেওয়া হত নিয়মিত। সেই সঙ্গেই চলে মন ভাল রাখার দাওয়াই। কর্তব্যরত নার্সেরা যেমন গান শোনান, তেমনই চিকিৎসকরা নানা বিষয় গল্প করেন। সবটাই অবশ্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই। সেই সঙ্গে রয়েছে সাউন্ড সিস্টেম। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দশজন চিকিৎসক সেখানে নজর রাখেন।

করোনার থাবা


জেলা আক্রান্ত* সুস্থ
কোচবিহার ১৬৬২ ১৩৭৪
আলিপুরদুয়ার ৮৯৮ ৪৯৮
জলপাইগুড়ি ২৫৮৪ ১৮৮০
দার্জিলিং ৪১৫১ ৩১৫৩

কালিম্পং ৩৬৪ ২২০
উত্তর দিনাজপুর ১৮৯৮ ১৪১৭
দক্ষিণ দিনাজপুর ২৯১৮ ১৯২১
মালদহ ৩৮২৫ ২৩৬৫
মোট ১৮৩০০ ১২৮২৮
*২০ অগস্ট রাত পর্যন্ত

পাশাপাশি, কোচবিহার সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও প্রয়োজন মতো রাউন্ডে যান। ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় সবসময় নজরদারি রাখা হয়। কারও কোনও সমস্যা চোখে পড়লেই সঙ্গে সঙ্গে নেওয়া হয় ব্যবস্থা। মূমূর্ষ রোগীর জন্য রয়েছে সিসিইউ। সেখানে চিকিৎসকরা দিনরাত পরিষেবা দেন। প্রয়োজনে পিপিই পরে রোগীদের খাইয়ে দেন কর্মীরা।

স্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, “অল্প সময়ে সেখানে সব রুমে টিভির ব্যবস্থা করা হবে, যাতে রোগীরা আরও চনমনে থাকেন।” ওই হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা এক রোগীর কথায়, “প্রথমটায় খুব ভয় হয়েছিল। এখন পাই আন্তরিকতা। তাতেই অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছি।”

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement