প্রতীকী ছবি।
সম্প্রতি কোচবিহার পরিদর্শনে এসেছিলেন করোনা বিষয়ক রাজ্য টাস্ক ফোর্সের সদস্য গোপালকৃষ্ণ ঢালি। সূত্রের খবর, তাঁকে জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে জানানো হয়, এখানে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আছে। কিন্তু তখনই প্রশ্ন উঠেছিল, শিলিগুড়িতে কোচবিহারের যে সব বাসিন্দা মারা যাচ্ছেন, তাঁদের কি জেলার তালিকায় রাখা হচ্ছে? এর সদুত্তর মেলেনি। ফলে আশঙ্কা ও আতঙ্ক রয়েই গিয়েছে জেলাবাসীদের মধ্যে। সেই আশঙ্কা আরও শুক্রবার শিলিগুড়ির এক কোভিড হাসপাতালে কোচবিহারের বাসিন্দা আর এক যুবকের মৃত্যু হল। বুধবার তাঁকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বৃহস্পতিবার কোচবিহারেও এক করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ান আগেই জানিয়েছেন, জেলার কোভিড বুলেটিনে জেলার হিসেব থাকছে। বাইরের জেলার হিসেব থাকছে না।
এর আগে গোপালকৃষ্ণ ঢালি জানিয়েছিলেন, যে জেলায় আক্রান্ত ও মৃত্যু হচ্ছে, সেখানেই তা নথিবদ্ধ হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলা কোভিড বুলেটিনে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৬৬২, মৃতের সংখ্যা ২। রাজ্য বুলেটিনে ওই বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোচবিহারে আক্রান্ত ১৯৩০ জন, মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। আক্রান্তের ক্ষেত্রে ২৬৮ জনের ফারাক রয়েছে। কিন্তু মৃত্যুর ক্ষেত্রে কোনও ফারাক নেই।
শিলিগুড়ি কোভিড হাসপাতাল সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, গত ১৪ অগস্ট সেখানে কোচবিহারের ২ বাসিন্দা মারা যান। তাঁদের রিপোর্ট পজিটিভ ছিল। যদিও প্রশাসন পরে জানায়, ওই দু’জনের মধ্যে একজনের রিপোর্ট মৃত্যুর আগে নেগেটিভ হয়। অপর জন সম্পর্কে তাঁদের কাছে কোনও তথ্য নেই। সে ক্ষেত্রে সেই অন্য জনের তথ্য ঠিক কোথায় আছে, তা জানেন না জেলার বাসিন্দারা। এর বাইরে কিছু দিন আগে দিনহাটার ভুলকিতেও এক করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়। কোচবিহার শহরের এক বাসিন্দাও কোভিড হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থাতেই মারা যান। প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, তিনি নানা বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
করোনার থাবা জেলা আক্রান্ত* সুস্থ কোচবিহার ১৭১৩ ১৪২১ আলিপুরদুয়ার ৯৪৬ ৪৯৮ জলপাইগুড়ি ২৬৭১ ১৯৪৮ দার্জিলিং ৪২৫৫ ৩২৪০ কালিম্পং ৩৮২ ২৫৬ উত্তর দিনাজপুর ১৯২৯ ১৪৪৫ দক্ষিণ দিনাজপুর ৩০৫৬ ২০১১ মালদহ ৩৮৬৪ ২৪১২ মোট ১৮৮১৬ ১৩২৩১ *২১ অগস্ট রাত পর্যন্ত
এর পাশাপাশি গত দেড় মাসে মৃতদেহ সৎকার করা নিয়েও একাধিক গণ্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে জেলায়। কোচবিহার মহাশ্মশান থেকে তুফানগঞ্জের শ্মশান, অনেক জায়গাতেই বাসিন্দাদের সঙ্গে পুলিশের বচসা হয়। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, যে কোনও কারণেই মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে একাধিক জায়গায় বাধা তৈরি করে বাসিন্দাদের একটি অংশ। সন্দেহের বশেই উত্তেজনা ছড়ান তাঁরা। বাসিন্দাদের তরফে পাল্টা দাবি, কোভিড হাসপাতালে যে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, সেগুলি স্পষ্ট ভাবে
জানানো প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে মানুষ আরও সচেতন হওয়ার সুযোগ পাবে। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “আমাদের জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার একদমই কম। আর অন্য জেলায় কেউ ভর্তি হলে সে বিষয়ে সেখানেই স্পষ্ট ভাবে রিপোর্ট থাকে।”
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)