অসচেতন: শিশু কোলে মাস্কহীন মা। শিলিগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র।
গৌড়বঙ্গের তিন জেলায় সংক্রমণ অনেকটাই কম। কিন্তু উত্তরবঙ্গের অন্য জেলাগুলিতে সংক্রমণ আশানুরূপ কমেনি। বিশেষ করে তরাই, ডুয়ার্সে এবং পাহাড়ে। দার্জিলিং, জলপাইগুড়িতে দৈনিক সংক্রমণ অনেকটা কম। এর মধ্যেই রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হতে পারে উত্তর প্রান্তের জেলাগুলি থেকেই। ফলে গোটা এলাকায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
মালদহে বুধবার পর্যন্ত দু’সপ্তাহে মোট নতুন সংক্রমণ ৫৮ জনের। তার মধ্যে তিন দিন সংক্রমণ ছিল শূন্য, দু’দিন একজন করে। দক্ষিণ দিনাজপুরে গত চার দিনে দৈনিক সংক্রমণ ৫-এর নীচে নেমেছে। উত্তর দিনাজপুরে গত কয়েক দিনে সংক্রমণ ১০-এর আশপাশে ছিল। অথচ এই সময়ে দার্জিলিং জেলায় দৈনিক সংক্রমণ ৭০-১০০।
গত দু’সপ্তাহে উত্তরবঙ্গে দৈনিক সংক্রমণ ৪৫০-৪০০ থেকে কমে ২৩০-২০০-তে নেমেছে। এর বেশিরভাগই দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারে, কোচবিহারে এবং কালিম্পংয়ে। উত্তরবঙ্গে করোনার প্রথম মৃত্যু কালিম্পংয়ে। তবু প্রথম ঢেউয়ে সেখানে সংক্রমণ বিশেষ ছড়াতে পারেনি। কিন্তু এখন গত দুই সপ্তাহে সেই জেলায় মোট ২৫৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। গড়ে দৈনিক সংক্রমণ প্রায় ১৯।
গত দু’সপ্তাহে দার্জিলিং জেলায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩৩৫ জন। গড়ে দৈনিক সংক্রমণ ৯৫ জনের বেশি। দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে শীর্ষে থাকা রাজ্যের ৩-৪টি জেলায় অন্যতম দার্জিলিং। জলপাইগুড়িতেও সংক্রমণ অনেকটা। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক থেকেও জলপাইগুড়ি জেলাকে সতর্ক করে সংক্রমণ কমাতে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। এর পরে সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনও আশানুরূপ নয়। গত ১৪ দিনে মোট সংক্রমণ ঘটেছে ৭৬১ জনের। গড়ে দৈনিক সংক্রমণ ৫৪ জনেরও বেশি। জনস্বাস্থ্য বিভাগের উত্তরবঙ্গের ওএসডি সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘গৌড়বঙ্গে সংক্রমণ কমলেও এ দিকে কমতে সময় লাগছে। সেটা চিন্তার বিষয়।’’ তিনি জানান, এর পিছনে মানুষের ঘোরাফেরা, জমায়েত অন্যতম কারণ। পাহাড় এবং ডুয়ার্সে পর্যটনও সংক্রমণ কমতে দিচ্ছে না, মনে করছেন তাঁরা। সুশান্তের কথায়, এখন ‘অফ সিজন’ হলেও প্রচুর মানুষ পাহাড় ঘুরতে আসছেন। করোনা কালে বাড়িতে থাকার ক্লান্তি, অবসাদ এর বড় কারণ।