প্রতীকী ছবি
ভুবনেশ্বর, ইটানগর থেকে মুম্বই কিংবা হরিয়ানার পঞ্চকুলা। আবার বেঙ্গালুরু থেকে কলকাতার বেলেঘাটার আকাশ। কোথাও সুখোই, কোথাও জ্যাগুয়ার, কোথাও বা মিগ-২৯ থেকে মাটিতে ঝরে পড়ল ফুলের পাপড়ি। করোনা যুদ্ধে সামিল চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের মনোবল বাড়াতে এমনই অভিনব সংবর্ধনার ব্যবস্থা করেছিল দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। কিন্তু সেই সংবর্ধনায় অজানা কারণেই ব্রাত্য থেকে গেল উত্তরবঙ্গ।
রবিবার সকালে কোথাও বায়ুসেনার কপ্টার কোভিড হাসপাতালের উপর ছড়াল গোলাপের পাপড়ি, কোথাও নৌবাহিনীর চপার বারবার উড়ে গেল হাসপাতালের উপর দিয়ে। কোথাও আবার হাসপাতালের সামনে বাজল সেনাবাহিনীর ব্যান্ড। আকাশে উড়ল ফুলের পাপড়ি। কিন্তু শিলিগুড়ির উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের উপরে পড়েনি ফুলের পাপাড়ি। জলপাইগুড়ি থেকে মালদহ, কোথাও বাজেনি সেনাবাহিনীর সংবর্ধনা জ্ঞাপন করার বিউগল। শিলিগুড়ির সুকনায় সেনা সদর দফতর, বাগডোগরায় বায়ুসেনা ঘাঁটি থাকার পরেও কেন এমন কর্মসূচি এখানে হল না তা স্পষ্ট নয়।
পেশায় চিকিৎসক ও জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায় অবশ্য এর কারণ জানেন না। তিনি বলেছেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসন আমাকে কার্যত গৃহবন্দি করে রেখেছে। কোথাও যোগাযোগ করতে পারছি না। কোথায় কী হচ্ছে তা বলতে পারছি না।’’
গত শনিবারই চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের মুখপাত্র ঘোষণা করেছিলেন, রবিবার সকাল থেকে দেশ জুড়ে সেনা, নৌসেনা এবং বায়ুসেনা এই কর্মসূচি নিয়েছে। টিভিতে তা প্রচার করা হয়েছিল। এ দিন সকাল থেকে মেডিক্যাল কলেজ এবং কোভিড হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তো বটেই ওই সমস্ত এলাকার বাসিন্দারও ভেবেছিলেন পুষ্পবৃষ্টি হবে। কিন্তু তা হয়নি। বেলা ১২ টার পর শিলিগুড়ির আকাশে দু’টি হেলিকপ্টার দেখা গিয়েছিল। কিন্তু তারা ফুল ছড়ায়নি বা হাসপাতালগুলির উপর দিয়ে ওড়েনি। অন্য দিনের মত আকাশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে চলে গিয়েছে। বাগডোগরা বায়ু সেনার সদর দফতরের তরফে এই নিয়ে কেউ কোনও কিছু বলেনি। বায়ুসেনার যোগাযোগকারী হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে বিষয়টি জানতে চাওয়া হলেও উত্তর আসেনি।
চিকিৎসকদের সংগঠন আইএমএ-র শিলিগুড়ি শাখার সচিব শেখর চক্রবর্তী বলেন, আমাদের এখানে হলে ওই সংবর্ধনা হলে সবার খুব ভাল লাগত। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের স্টুডেন্টস অ্যাফেয়ার্সের ডিন সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আমরা, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে সবাই একটি যুদ্ধের সৈনিক। দেশকে রক্ষাকারী আসল সৈনিকেরা আমাদের পাশে ঘোষণামত দাঁটড়ালে আমাদেরও মনোবল বাড়ত।’’