প্রতীকী ছবি।
গোটা উত্তরবঙ্গে করোনার দাপট এখনও যথেষ্ট রয়েছে। সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা যা রয়েছে, তা নিয়ে এখনকার পরিস্থিতি কোনওমতে সামলানো যাচ্ছে বলে দাবি। আশঙ্কা করা হচ্ছে পুজোর পরে রাজ্যে সংক্রমণের হার বাড়তে পারে। তেমন হলে তখন সরকারি ব্যবস্থায় শয্যার অভাব ঘটলে পরিষেবা কী ভাবে দেওয়া যাবে। তা নিয়ে বাড়ছে আশঙ্কা।
উদ্বেগের কারণও রয়েছে। যেমন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল। এটা কোভিড হাসপাতাল নয়। সন্দেহভাজন হলে এখানে ভর্তি করা হচ্ছে। সংক্রমণ ধরা পড়লে তখন তাঁকে কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছিল। কিন্তু সম্প্রতি শিলিগুড়ির দু’টো কোভিড হাসপাতালে বিশেষ করে সেখানকার আইসিইউ-তে অনেক সময় জায়গা ফাঁকা থাকছে না। মেডিক্যালের সূত্রে খবর, গত দু’সপ্তাহ ধরে এমন পরিস্থিতিতে মেডিক্যালেই আক্রান্তদের রেখে চিকিৎসা করতে হচ্ছে। কোভিডে জায়গা ফাঁকা হলে সেই মতো স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুরের মতো উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকেই করোনা সন্দেহে প্রচুর রোগী উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি হচ্ছেন। পরে করোনা সংক্রমণও ধরা পরছে। এই সংখ্যা বেড়ে গেলে কী ভাবে সামাল দেওয়া যাবে তা নিয়ে চিন্তিত চিকিৎসকরা।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, ‘‘এখনও মাঝেমধ্যে কোভিড হাসপাতালে শয্যা ফাঁকা না থাকলে সমস্যা হচ্ছে। হাসপাতালেই রেসপিরেটরি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা করতে হচ্ছে। পরে শয্যা ফাঁকা হলে কোভিডে পাঠানো হচ্ছে। এই চাপ পুজোর পর বাড়বে বলেই মনে হচ্ছে। সেই মতো আমাদেরও ব্যবস্থা নিতে হবে।’’
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠকে বলে গিয়েছেন করোনা সংক্রমণ নিয়ে কোথাও কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠিয়ে দেবেন।
বর্তমানে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে মেডিসিন বিভাগে ৮০ শয্যার আলাদা ওয়ার্ড করে সেখানে সন্দেহভাজনদের রাখা হচ্ছে। করোনা পরীক্ষা করে রিপোর্ট মিললে সেখান থেকে প্রয়োজন মতো আইসোলেশনে বা অন্য ওয়ার্ডে পাঠানো হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ জানান, আক্রান্তদের কোভিড হাসপাতালে পাঠানো সম্ভব না হলে আলাদা জায়গার ব্যবস্থা করতে হবে। সেই মতো ভাবনা চিন্তা চলছে।
শনিবার জেলাশাসকদের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠকে রাজ্যের মুখ্য সচিব এবং স্বাস্থ্য সচিব পুজোর পর সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা নিয়ে সর্তক করেছেন। সেফহোম এবং কোভিড হাসপাতালে শয্যা বাড়ানোর প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলেছেন। দার্জিলিঙের জেলাশাসক এস পুন্নমবলম বলেন, ‘‘সেফ হোমে শয্যা অনেকটাই ফাঁকা রয়েছে। সেখানে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে কিছু রোগী রাখা যেতে পারে। প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’