প্রতীকী ছবি।
সমতলে শিলিগুড়িতে করোনার সংক্রমণ বাড়ছিলই। কিন্তু স্বস্তি ছিল পাহাড়ে। সেখানে সংক্রমণ ঘটলেও তা খুব বেশি ছিল না। তবে এ বার আর স্বস্তিতে থাকার উপায় নেই পাহাড়বাসীর। পাহাড়েও করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে, হচ্ছে মৃত্যুও। তাতে উদ্বেগ বেড়েছে জিটিএ কর্তৃপক্ষের। গত দুই সপ্তাহ ধরে দার্জিলিং জেলা এবং কালিম্পঙ মিলিয়ে পাহাড়ে সংক্রমণ বেড়ে আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচশোর কাছে পৌঁছেছে। পাহাড়ে করোনার সংক্রমণ নিয়ে ১২ অগস্ট পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৭ জনের। তার মধ্যে ৬ জন দার্জিলিং পাহাড়ের। ১ জন কালিম্পঙের।
জিটিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দার্জিলিং পাহাড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ২৪৩ জনে পৌঁছেছে। কালিম্পঙে সেই সংখ্যাটা ২৪৫ জন। অগস্টের শুরু থেকেই সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে পাহাড়ে। গত দুই সপ্তাহে দার্জিলিং পাহাড়ে শতাধিক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কালিম্পঙেও তাই। তাতে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে জিটিএ কর্তৃপক্ষের কপালেও। জিটিএ বোর্ডের চেয়ারম্যান অনীত থাপা বলেন, ‘‘আমরা সতর্ক রয়েছি। সংক্রমণ রুখতে সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। করোনার চিকিৎসার কথা মাথায় রেখে রাজ্যের সহযোগিতায় ত্রিবেণীতে ইতিমধ্যেই একটি কোভিড হাসপাতাল চালু করা হয়েছে।’’
প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিং এবং কালিম্পং পাহাড়ের মাঝামাঝি জায়গায় ওই হাসপাতাল চালু করা হয় পাহাড়ের বাসিন্দাদের করোনার চিকিৎসার কথা মাথা রেখেই। পাহাড়ের রোগীদের যাতে পাকদন্ডী বেয়ে সমতলে চিকিৎসার জন্য সব সময় যেতে না হয়। সমতলে সংক্রমণ বাড়তে থাকলে জিটিএ কর্তৃপক্ষ শুরু থেকেই সতর্ক হন। আনলক পর্বে পাহাড়ে দুই একটি পর্যটক দল আসতে শুরু করলে পাহাড়বাসীর তা চাননি। করোনা রুখতে পর্যটকদের আসা বন্ধ রাখা হয়েছে। জিটিএ সীমানার বিভিন্ন জায়গায় থার্মাল স্ক্যানিং, স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা হয়েছে। নানা ভাবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রেখেছিল জিটিএ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সে সব করেও সংক্রমণকে রোখা সম্ভব হয়নি।
স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে দার্জিলিং এবং কালিম্পং উভয় ক্ষেত্রেই শতাধিক ব্যক্তি করোনার সংক্রমণ নিয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। কেউ কোভিড হাসপাতালে, কেউ হোম কোয়রান্টিনে। গত বৃহস্পতিবার ১৫ জন দার্জিলিং পাহাড়ে এবং কালিম্পঙে ২২ জন আক্রান্ত হওয়ার রিপোর্ট মেলে। ৯ থেকে ১২ অগস্ট পর্যন্ত দার্জিলিং পাহাড়ে প্রতিদিন ৯ জন করে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। ৭ এবং ৮ অগস্ট ১৭ জন করে আক্রান্ত হন। কালিম্পঙে ১২ অগস্ট ২৩ জন, ১১ অগস্ট ৮ জন এবং ১০ অগস্ট ৪৭ জনের সংক্রমণ মিলেছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)