প্রতীকী ছবি।
করোনা মানচিত্রে এ বার ঢুকল মালদহের নাম। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, রবিবার রাত পর্যন্ত মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ৪২০ জনের করোনা-পরীক্ষা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মানিকচকের সরকারি কোয়রান্টিনে থাকা এক ব্যক্তির রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসে। সোমবার দুপুরে ওই রোগীকে মালদহ থেকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে শিলিগুড়ির এক কোভিড হাসপাতালে। এ দিনও জেলায় ১৩৭ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। মালদহে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়তেই এ দিন করোনা রোগীর সন্ধান মিলল বলে দাবি চিকিৎসক মহলের একাংশের।
‘গ্রিন জোন’-এ ছিল মালদহ। তাতে স্বস্তিতে ছিলেন জেলাবাসী। মানিকচক কলেজে সরকারি কোয়রান্টিনে থাকা এক ব্যক্তির করোনা ‘পজ়িটিভ’ ধরা পড়তেই হইচই পড়ে যায়। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, অ্যাম্বুল্যান্স চালক, স্বাস্থ্যকর্মীদের পিপিই পরিয়ে ওই রোগীকে কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ২৪ এপ্রিল ওই ব্যক্তি উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত থেকে মালদহে আসেন। তার পর থেকেই তাঁকে সরকারি কোয়রান্টিন কেন্দ্রে রাখা হয়। ওই কোয়রান্টিন কেন্দ্রে আরও কয়েক জন রয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেকেরই লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, ওই কোয়রান্টিন কেন্দ্রের দশ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। এর মধ্যে একজনের রিপোর্ট পজ়িটিভ। পাঁচ দিন পরে ফের বাকিদের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হবে।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি ছোট গাড়িতে করে মালদহে আসেন। তাঁর সঙ্গে আরও আট জন ছিলেন। পাঁচ জন মানিকচকের বাসিন্দা। বাকি তিন জন ইংরেজবাজারের। মানিকচকের পাঁচ জনকে সরকারি কোয়রান্টিন কেন্দ্রে রাখা হলেও ইংরেজবাজারের তিন জন গৃহ-পর্যবেক্ষণে ছিলেন। এ দিন মানিকচকে ওই ব্যক্তির রিপোর্ট পজ়িটিভ মিলতেই তিন জনকে সরকারি কোয়রান্টিন কেন্দ্রে নিয়ে যায় পুলিশ। প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, সরকারি কোয়রান্টিন কেন্দ্রেই আক্রান্তের হদিস মেলায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার তেমন সম্ভাবনা নেই। তবে আক্রান্ত ব্যক্তির গতিবিধির খোঁজখবর শুরু করেছে পুলিশ-প্রশাসন।
করোনা আক্রান্ত রোগীকে নিয়ে মালদহ থেকে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায় কোভিড হাসপাতালে আসার পথে রাস্তায় বিগড়ে গেল অ্যাম্বুল্যান্স। ইসলামপুরের পরে ওই ঘটনায় করোনা আক্রান্ত রোগীকে নিয়ে বিপাকে পড়েন স্বাস্থ্য কর্মী, অ্যাম্বুল্যান্সের চালকেরা। স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ মানিকচক কলেজের কোয়রান্টিন সেন্টার থেকে বেলা ১২টা নাগাদ রোগীকে নিয়ে রওনা হয় অ্যাম্বুল্যান্সটি। রাত আটটাতেও ওই রোগীকে নিয়ে মাটিগাড়ার কোভিড হাসপাতালে পৌঁছয়নি গাড়ি। প্রাথমিকভাবে তারা জানতে পেরেছেন গাড়ির পরিস্থিতি ভাল ছিল না। ইসলামপুরের আগে কিসানগঞ্জে গাড়ির একটি চাকা পাংচার হয়ে যায়। অ্যাম্বুল্যান্স কর্মীরা মালদহ জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে ফোন করে। রাস্তার ধারে গাড়ি দাঁড় করিয়ে মেরামত করাতে কয়েকঘন্টা সময় লাগবে বলে জানানো হয়। রোগী আছে জেনে গ্যারেজ কর্মী আসতে চাইছিল না। পরে গাড়ির চাকা খুলে চালক চাকা মেরামত করিয়ে আনে। অভিযোগ, ওই গাড়িটির পরিস্থিতি ভাল ছিল না। তার পরেও কেন করোনা আক্রান্ত এমন একজন রোগীকে পাঠানো হল সেই প্রশ্ন উঠেছে। প্রশাসন, স্বাস্থ্যদফতরের আধিকারিকরা কেউ এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি।