Coronavirus in North Bengal

বিমা থেকেও অসহায়তার শিকার বহু রোগীর পরিবার

গত বছর করোনার সময়কালে মাটিগাড়ার উত্তরায়ণ উপনগরীর এলাকার একটি নার্সিংহোমকে তালিকার বাইরে করে দেয় দেশের নামকরা একটি বিমা সংস্থা।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী ও সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২১ ০৭:০১
Share:

প্রতীকী ছবি।

শহরের প্রধাননগরের বহু পরিচিত একটি নার্সিংহোমে কিছুদিন আগের ঘটনা। আশ্রমপাড়ার এক পরিবারের করোনা আক্রান্ত রোগীকে ভর্তির জন্য নার্সিংহোমটিতে যোগাযোগ করা হয়। নির্দিষ্ট বিমা সংস্থার কথা বলার পর জানানো হয়, তাঁদের নার্সিংহোমে সংস্থার ক্যাশলেসের সুবিধা বা অনুমোদন নেই। বাধ্য হয়ে লাগোয়া আর একটি বড় নার্সিংহেমে তাঁরা রোগীকে ভর্তি করান। সেখানে ক্যাশলেসের সুবিধাও পান। পরে পরিবারটি জানতে পারেন, প্রথম নার্সিংহোমটিতেও ক্যাশলেসের অনুমোদন রয়েছে। নগদ টাকার জন্য তারা ক্যাশলেসের সুবিধা দিচ্ছে না। কিন্তু ওই পরিবারটিকে ক্যাশলেস না দেওয়ার বিষয়টির লিখিত কোনও প্রমাণ না থাকায় স্বাস্থ্য দফতর, প্রশাসন তো বটেই— নার্সিংহোমটির বিরুদ্ধে ওই ঘটনায় কেউ কিছুই করতে পারেননি।

Advertisement

গত বছর করোনার সময়কালে মাটিগাড়ার উত্তরায়ণ উপনগরীর এলাকার একটি নার্সিংহোমকে তালিকার বাইরে করে দেয় দেশের নামকরা একটি বিমা সংস্থা। অভিযোগ, বহুক্ষেত্রে তারা রোগীদের বিলের অঙ্ক বেশি করে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে রোগীর প্রয়োজনের বাইরে পরীক্ষা করায়। যা নিয়ে দু’পক্ষের আলোচনা করিয়েও সুরাহা হয়নি। এখনও সেখানে ওই বিমা সংস্থার কোনও সুযোগ রোগীর পরিবাররা পায় না। বিমা সংস্থাগুলি সরকারি গাইডলাইন এবং আইআরডিএ (ইনসিওরেন্স রেগুলেটরি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি) নির্দেশ মেনে চলে। কিন্তু অনেক সময়ই বিমাকে এড়ানো বা ক্যাশলেস না দেওয়ার চেষ্টা করে নার্সিংহোমগুলি। এতে ইচ্ছেমতো বিল তৈরি করে নগদ টাকা রোগীর পরিবারের থেকে নিয়ে নেওয়া যায়।

পরবর্তীকালে বিমা সংস্থা রোগীর পরিবারকে নিয়ম মেনে যা টাকা দেয়, তাতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় পরিবারকে। এ বছরও বহু নার্সিংহোমে এমন চলছে বলে অভিযোগ। আবার মোটা টাকা বিমা সংস্থার কাছ থেকে নিয়ে পরিষেবা না দেওয়ার অভিযোগও এখন ভুরিভুরি সামনে আসছে।

Advertisement

একটি স্বাস্থ্য বিমা সংস্থার ডেপুটি ম্যানেজার রসময় রায় বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে নার্সিংহোমগুলো থেকে সেই পরিষেবা নেওয়ার সময়ও সতর্ক থাকতে হবে। সব কিছু জেনে নেওয়া উচিত।’’

বিমা সংস্থাগুলির একাংশ জানিয়েছে, সরকারি বা বেসরকারি বেশিরভাগ স্বাস্থ্য বিমা ৩ লক্ষের মধ্যে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিমা ৫-৭ লক্ষ টাকার। ১০ লক্ষের বেশি স্বাস্থ্য বিমার সংখ্যা কম। বিমা থাকলে রোগীর পরিবারও বাড়তি বিলের দিকে অনেক সময় নজর দেয় না। সেই কারণে রোগী ভর্তির ক্ষেত্রে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ সবার আগে খোঁজ নেন, রোগীর স্বাস্থ্য বিমা রয়েছে কি না। থাকলে সেটা কত টাকার।

আবার বিমার অর্থমূল্য কম থাকলে অনেক সময় কিছু নার্সিংহোম ক্যাশলেস দিতে অনীহা প্রকাশ করে বলে অভিযোগ। করোনার প্রথম ঢেউয়ে অনেককেই এই সমস্যায় পড়তে হয়েছে। কারণ, ক্যাশলেস পরিষেবায় যে বিল হয়, তা বিমা সংস্থার তরফে ‘থার্ড পার্টি অথরিটিজ়’ খতিয়ে দেখে। তাদের তরফে কোন পরিষেবার কী অর্থ হওয়া চাই, তা আগে থেকে নির্দিষ্ট থাকে। তার বাইরে গেলে তারা নার্সিংহোমের কাছে জবাবদিহি চায়। একটি বিমা সংস্থার শিলিগুড়ি জোনের ম্যানেজার বলেন, ‘‘করোনায় অতিরিক্ত বিল করার প্রবণতা নার্সিংহোমগুলোর বেড়েছে। রোগীর পরিবারকেও সচেতন হতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement