প্রতীকী ছবি।
উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে করোনা সন্দেহভাজনদের লালারস পরীক্ষার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠাতে ভাইরাল ট্রান্সপোর্ট মিডিয়াম (ভিটিএম) দরকার। যাতে লালার নমুনা সংরক্ষিত করে নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে আনা হয়। প্রতিটি নমুনা পাঠাতে আলাদা ভিটিএম ব্যবহার হয়। এই ভিটিএম সরবরাহ পর্যাপ্ত না-থাকায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। গত মঙ্গলবার ১৮০০ ভিটিএম রাজ্যের তরফে পাঠানো হয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে দাবি, এই দিয়ে কয়েক দিন চলবে। ভিটিএম পর্যাপ্ত না-পেলে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে বেশি করে নমুনা সংগ্রহ, পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো আটকে পড়বে বলেই মত আধিকারিকদের।
ইতিমধ্যে মোবাইল কিয়স্ক চালু হয়েছে। তাতে অ্যাম্বুল্যান্সে করে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে লালা সংগ্রহ করা হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যে এমন ৩০টি কিয়স্ক উত্তরবঙ্গে কাজ করবে। ভিটিএম ব্যবস্থাতেই তারা লালা সংগ্রহ করে আনাছে। ভিটিএম না মিললে সেই কাজও বাধাপ্রাপ্ত হবে। তা ছাড়া কোটা ফেরত পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের লালারস সংগ্রহ করতেও বাড়তি ভিটিএম দরকার। তা না থাকায় সমস্যা হচ্ছে, দাবি সংশ্লিষ্ট জেলাগুলির স্বাস্থ্য দফতরের। করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গে বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘প্রয়োজন মতো কলকাতা থেকে ভিটিএম পাঠানো হচ্ছে। আগে কম পরীক্ষা হত বলে কম আসত। এখন থেকে বেশি করে পাঠানো হবে।’’ এদিন ভিডিয়ো কনফারেন্সে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। সুশান্তবাবুর দাবি, শুক্রবারই অন্তত পাঁচ হাজার ভিডিএম পাঠানোর কথা রয়েছে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি রিসার্চ অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরি এবং মালদহ মেডিক্যাল কলেজের ল্যাবরেটরি থেকেই উত্তরবঙ্গের পরীক্ষা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। রাজ্য থেকে এখানে ভিটিএম পাঠানো হয়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ভিআরডিএল থেকে সেগুলি জেলাগুলিতে প্রয়োজন মতো ভাগ করে দেওয়া হয়। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, দার্জিলিং জেলা হাসপাতাল বা জেলাগুলিতে থাকা সারি হাসপাতালে বা ব্লকগুলির জন্য জেলা স্বাস্থ্য দফতরে ভিটিএম পাঠানো হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ভিআরডিএল থেকে। ইসলামপুরের নমুনা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে আনা হয়। সে কারণে তারাও ভিটিএম নেয় এখান থেকে। মালদহের ল্যাবরেটরি থেকে দুই দিনাজপুরে ভিটিএম সরবরাহ করা হয়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ভিআরডিএল-এ রোজ চারশোর বেশি নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। তাই সপ্তাহে সাড়ে তিন হাজারের মতো ভিটিএম এখনই দরকার হচ্ছে। অথচ পর্যাপ্ত সরবরাহ না-হওয়ায় চিন্তায় থাকতে হচ্ছে। গত মঙ্গলবার ১৮০০ ভিডিএম এসেছিল। তা প্রায় শেষের দিকে। তা ছাড়া সব ভিটিএম খরচ না করে হাতেও কিছুটা রাখার দরকার হয়।
অন্য দিকে, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের এক প্রসূতিকে করোনা সন্দেহে বিশেষ আইসোলেশনে বুধবার ভর্তি করানো হয়েছিল। তাঁর বাড়ি কালিম্পঙে। তিনি রাতে মারা গিয়েছেন। তবে তাঁর লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে বলে হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে।