প্রতীকী ছবি
এ বার করোনায় আক্রান্ত হলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের শাসক দলের এক যুব নেতা। স্বাস্হ্য দফতর জানিয়েছে, ২৩ জুন কুশমণ্ডির ওই নেতার লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য মালদহে পাঠানো হয়। রিপোর্ট আসার আগে উপসর্গহীন তৃণমূলের ওই নেতা ২৫ জুন সন্ধ্যায় বুনিয়াদপুরে মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভামঞ্চে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে ছিলেন। শনিবার তাঁর পজ়িটিভ রিপোর্ট মিললে শাসকদলে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যসভা সাংসদ অর্পিতা ঘোষ জানান, মন্ত্রীকে বিষয়টি জানিয়ে করোনা পরীক্ষা করে নিতে বলেছেন। তা ছাড়া বালুরঘাটের প্রশাসনিক ভবন চত্বরে বুনিয়াদপুরের সভায় উপস্হিত তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব এবং কয়েক জন সাংবাদিকের করোনা পরীক্ষার জন্য লালারসের নমুনা সংগ্রহ হবে বলে তিনি জানান।
এ দিন বালুরঘাটে তিনি বলেন, গোষ্ঠী সংক্রমণ থেকে দলের ওই যুব নেতা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁর সংস্পর্শে আসা অন্তত ৪০ জন জেলা নেতাকে গৃহ-নিভৃতবাসে পাঠানো হচ্ছে। অর্পিতা নিজেও গৃহ-নিভৃতবাসে যাচ্ছেন বলে জানান।
এ দিকে দক্ষিণ দিনাজপুরে করোনা ডবল সেঞ্চুরির পথে এগোল। এ দিকে, করোনা আক্রান্ত এক পুলিশকর্মী বালুরঘাটের সিজেএম আদালতের জিআর বিভাগের কর্মীদের সংস্পর্শে এসেছেন বলেও খবর। বালুরঘাট বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিদ্যুত রায় জানান, জেলা জজ চন্দ্রানী মুখোপাধ্যায় বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সিজেএম কোটের কাজকর্ম আপাতত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-২ কোর্ট থেকে হবে।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এ দিন জেলায় আরও ১২ জনের করোনা পরীক্ষার পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। তাতে কুশমণ্ডির যুব তৃণমূল নেতা এবং পঞ্চায়েতের এক কর্মাধ্যক্ষ সহ ৬ জন এবং গঙ্গারামপুরের ২ জন স্বাস্হ্যকর্মী ও আগে আক্রান্ত সিভিককর্মীর পরিবারের ৪ জন মহিলা রয়েছেন। এ নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৯৪।
জেলার মুখ্য স্বাস্হ্য আধিকারিক সুকুমার দে জানান আক্রান্তদের সেফ হোমে রেখে চিকিতসা করা হবে। জেলায় অ্যাকটিভ করোনা রোগী ৯১ জনকে আইসোলেশন কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে ১০০ জনের উপরে সুস্হ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন বলে সুকুমার জানান। তবে আক্রান্ত পরিযায়ী শ্রমিক থেকে করোনা ক্রমশ গোষ্ঠী সংক্রমণের দিকে এগোচ্ছে বলে মেনে নিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ।
জেলা স্বাস্হ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্রুত রোগ নির্ণয়ের জন্য জেলায় ধারাবাহিক লালারসের নমুনা পরীক্ষার প্রক্রিয়া শুরু করা হলেও বকেয়া রিপোর্টের জেরে তা ধাক্কা খাচ্ছে। এরফলে উপসর্গহীন করোনা পজ়িটিভ রোগীরা সকলের সঙ্গে মেলামেশা করছেন। এতে রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ অফিসার ও সিভিক এবং বিডিও অফিসের একাধিক কর্মী করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে তাঁদের আত্মীয়দের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য মালদহে পাঠানো হয়। শনিবার রিপোর্ট আসতেই দেখা যায়, আক্রান্তদের পরিবারের সদস্যরাও করোনা পজিটিভ হয়েছেন। ফলে ক্রমেই জেলা জুড়ে গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কায় চিন্তা জেলার স্বাস্হ্যকর্তারা।