প্রতীকী ছবি
করোনার সংক্রমণ নিয়ে বাড়িতেই মারা গেলেন শক্তিগড় এলাকার এক প্রৌঢ়। মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে করোনার সংক্রমণ নিয়ে মারা গিয়েছেন ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা ৫৪ বছরের এক মহিলাও। এ ছাড়া উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে করোনার সংক্রমণ নিয়ে সোমবার গভীর রাতে আরও তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের দুই জন শিলিগুড়ি শহরের এবং জন শহর লাগোয়া এলাকার।
মঙ্গলবার ভোরে পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ৮৮ বছরের ওই প্রৌঢ় মারা যান। ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর দীপা বিশ্বাস জানান, দিন চারেক আগে তাঁর ছেলে করোনার সংক্রমণেই মারা যান। তিনি সিপিএমের কর্মী ছিলেন। তারপর থেকেই পরিবারের সদস্যরা কয়েক জন অসুস্থ ছিলেন। ২৫ জুলাই তাঁদের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। এদিন সকাল পর্যন্ত তাঁদের রিপোর্ট মেলেনি। পরে মৃত ব্যক্তির লালারসের নমুনা পরীক্ষা রিপোর্ট এলে দেখা যায় তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন। অথচ রিপোর্ট আগে এলে তাঁর চিকিৎসা ব্যবস্থা করা সম্ভব হত বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিন বিকেলে পরিবারের বাকিদের রিপোর্ট এলে জানা যায়, মৃতের এক ছেলে এবং তাঁর সন্তান করোনা আক্রান্ত। তাদের কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ৩১ নম্বর ওয়ার্ড জলপাইগুড়ি জেলার অধীনে। সে জন্য তাঁকে দাহ করতে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের তরফে গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়। ভোর সাড়ে ছ’টা নাগাদ তিনি মারা গেলেও দেহ সৎকার করতে নেওয়াহয় বেলা আড়াইটে নাগাদ। এই আট ঘণ্টা বাড়িতেই পড়ে ছিল দেহ। জলপাইগুড়ি জেলা সদর দূরে বলে সংযোজিত এলাকার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সমন্বয়ের যাতে সমস্যা না হয় সে জন্য একজন নোডাল অফিসার দেওয়া হয়েছে। তিনি পুরসভা এবং দার্জিলিং জেলাপ্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করছেন। মৃতের দেহ সাহুডাঙি শ্মশানে সৎকার করা হয়। সে ক্ষেত্রে জলপাইগুড়ি থেকে গাড়ির ব্যবস্থা না করে শিলিগুড়ি থেকেই গাড়ি ব্যবস্থা করতে দার্জিলিং জেলা প্রশাসন কেন ব্যবস্থা নেবে না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। তাতে এসব ক্ষেত্রে দ্রুত সৎকার করা সম্ভব হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তা নিয়ে সরব হয়েছেন সিপিএমের জেলাসম্পাদক জীবেশ সরকার। তিনি বলেন, ‘‘রিপোর্ট আগে না পাওয়ায় কার্যত চিকিৎসার সুয়োগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।’’
সোমবার রাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে করোনার সংক্রমণ নিয়ে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দক্ষিণ ভারতনগরের বাসিন্দা ৭২ বছরের এক ব্যক্তি রয়েছে। শিবরামপল্লি এলাকার বাসিন্দা ৫৮ বছরের এক ব্যক্তি রয়েছে। শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া একতিয়াশাল এলাকার বাসিন্দা ৬০ বছরের এক ব্যক্তিও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে মারা যান। মৃত্যুর পর তাদের লালারসের রিপোর্ট পজিটিভ মেলে।
নতুন করে শিলিগুড়ি শহরে এ দিন ৩০ জনের সংক্রমণ ঘটেছে। তার মধ্যে ১০ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচজন সংক্রমিত হয়েছেন একই পরিবারের। তাঁদের দুই জন নিজেরাই কাওয়াখালি কোভিড হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হন। বাকিরা বাড়িতে রয়েছেন। বাড়িতে একটি শৌচালয় থাকায় তারা সেফ হাউজে থাকতে চেয়েছেন।
শিলিগুড়ি পুর এলাকার বাইরে নতুন করে ২৪ জনের সংক্রমণের রিপোর্ট মিলেছে এ দিন। তার মধ্যে নকশালবাড়ির ১৬ জন রয়েছেন। যাঁদের মধ্যে আবার ১২ জনই বেঙডুবি সেনা হাসপাতালে কর্মী বা তাঁদের পরিবারের লোক। পাহাড়ে ৬ জনের দেহে নতুন করে সংক্রমণের সন্ধান মিলেছে। তার মধ্যে সুখিয়াপোখরির ৪ জন রয়েছেন।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)