প্রতীকী ছবি
ফের কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত একজনের মৃত্যু হল। শনিবার রাতে তিনি মারা যান। এর আগে আরও ৮ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে এই কোভিড হাসপাতালে। ফের মৃত্যুতে স্বাস্থ্য দফতর এবং জেলাপ্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রবিবার বিকেলে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে করোনা আক্রান্ত আর এক মহিলা মারা যান। ৫০ বছরের ওই মহিলা নকশালবাড়ির বাসিন্দা। এ দিনই সেবক রোডের দুই মাইলে একটি নার্সিংহোমে দেশবন্ধুপাড়ার বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের এক মহিলা মারা যান। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে তিনি করোনা আক্রান্ত। কিডনির অসুখেও ভুগছিলেন। কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতালে কিছুদিন তাঁর চিকিৎসা হয়েছে। পরে ওই নার্সিংহোমে আনা হয়। ২৬ জুন ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে, বাড়িতে শ্বাসকষ্টে যে প্রতিবন্ধী তরুণের মৃত্যু হয়েছে সে করোনা আক্রান্ত ছিল বলে এ দিন লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট মিলেছে। এর ফলে শিলিগুড়ি পুর ও মহকুমা এলাকা মিলিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৭ জন।
কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতালে মৃত ব্যক্তির পরিবার জানায়, দিন কয়েক আগে জলপাইগুড়ির বাসিন্দা এই ব্যক্তির ফুসফুসে ক্যানসার ধরা পরে। চিকিৎসার জন্য শিলিগুড়ির আয়কর ভবনের কাছে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। সেখানে করোনা সংক্রমণ রয়েছে ধরা পড়তেই শুক্রবার রাতে তাঁকে কাওয়াখালি কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়। শনিবার রাতে পরিবারকে ফোন করে জানানো হয় রোগী মারা গিয়েছেন। কোভিড হাসপাতালে ওই ব্যক্তি কতটা চিকিৎসা পেয়েছেন তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন মৃতের ছেলে।
একের পর এক মৃত্যুতে কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতালের পরিবেষার মান নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছে। করোনা আক্রান্ত গুরুতর অসুস্থদের এই হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। অথচ অভিযোগ, এখানে আইসিইউ’র ইনচার্জ নেই। নিউরোসার্জেন, একজন কার্ডিয়োলজিস্ট এবং মেডিসিনের একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকলেও আর কোনও বিশেষজ্ঞ বা ক্রিটিক্যাল কেয়ারের চিকিৎসক নেই। সে কারণে ফুসফুস, কিডনি সংক্রান্ত রোগ নিয়ে যে সব করোনা রোগীরা ভর্তি হচ্ছেন, তাঁদের চিকিৎসা আদৌ কতটা হচ্ছে সেই প্রশ্ন তুলেছেন পরিবারের লোকেরা। কোমর্বিডিটি রয়েছে এমন করোনা রোগীদের উন্নত চিকিৎসা দিতে আট বিশেষজ্ঞের সুপার স্পেশ্যালিটি টিম তৈরি, কাওয়াখালির কোভিডে ক্রিটিক্যাল কেয়ারের চিকিৎসক, ডেডিকেটেড নার্স নিয়োগের কথা জানিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক সুশান্ত রায়। এখনও তাঁরা যোগ দেননি বলে অভিযোগ। সুশান্ত বলেন, ‘‘দুই চিকিৎসককে কাওয়াখালির কোভিডে পাঠানো হয়েছে। সোমবার তাঁদের যোগ দেওয়ার কথা।’’
কোথায় কত
জেলা আক্রান্ত* সুস্থ
কোচবিহার ২৯৬ ২৮১
আলিপুরদুয়ার ১৮২ ১০৮
জলপাইগুড়ি ৩৩৫ ২৬৩
দার্জিলিং ৪৫৫ ২৫০
কালিম্পং ৫২ ৪৫
উত্তর দিনাজপুর ২৮৭ ২২৬
দক্ষিণ দিনাজপুর ২০০ ১৩৪
মালদহ ৫৬৪ ৩০৯
মোট ২৩৭১ ১৬১৬
* ২৮ জুন রাত পর্যন্ত
এ দিন শিলিগুড়িতে নতুন করে ৩৮ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ মিলেছে। তার মধ্যে ৩০ জন শিলিগুড়ি পুর এলাকার বাসিন্দা। এ দিন ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৭, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ জনের সংক্রমণ মিলেছে। মাটিগাড়া ও নকশালবাড়িতে দু’জন করে আক্রান্ত। মেডিক্যালে ভর্তি মাদারিহাটের এক বাসিন্দা এ দিন ভোরে মারা যান। তাঁর লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ।