কোচবিহারে র‌্যাপিড টেস্ট
Coronavirus in North Bengal

আক্রান্ত তিন কর্মী, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে তালা 

আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে কোচবিহারে। মঙ্গলবার নতুন করে আরও ২১ জন করোনায় আক্রান্ত হলেন জেলায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২০ ০৬:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি

এবার আলিপুরদুয়ারে করোনায় আক্রান্ত হলেন তিন ব্যাঙ্ক কর্মী এবং এনবিএসটিসির দুই বাসচালক ও এক কন্ডাক্টর। যার জেরে মঙ্গলবার শহরের কলেজ হল্টে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মূল শাখা তিনদিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল। তবে বাস চালক ও কন্ডাক্টর আক্রান্ত হলেও এদিন এনবিএসটিসি-র আলিপুরদুয়ার ডিপো থেকে বাস পরিষেবায় অবশ্য তার কোনও প্রভাব পড়েনি। এদিকে, ট্রুন্যাট মেশিনে লালারসের পরীক্ষায় ফালাকাটায় একটি মদের দোকানের এক কর্মীর করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়েছে। এরইমধ্যে এদিন আলিপুরদুয়ারে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা তিনশো ছাড়াল।

Advertisement

এদিকে, আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে কোচবিহারে। মঙ্গলবার নতুন করে আরও ২১ জন করোনায় আক্রান্ত হলেন জেলায়। সবমিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৫০০ জনের কাছাকাছি। অবশ্য তার একটি বড় অংশ ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। সংক্রমণ আটকাতে টানা লকডাউন শুরু হয়েছে কোচবিহার শহরে। তার পরেও অবশ্য সকালের বাজারে উপচে পড়ছে ভিড়। মাস্ক ছাড়াই ঘুরে বেড়াচ্ছেন বহু মানুষ। এমন অবস্থায় এদিন থেকে র‌্যাপিড টেস্ট (অ্যান্টিজেন) শুরু হল জেলায়। পরীক্ষার হার আরও বাড়াতেই ওই পরীক্ষা শুরু করা হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ান জানান, করোনা আক্রান্তদের চিহ্নিত করার লক্ষ্যেই র‌্যাপিড টেস্ট শুরু করা হয়েছে।

গত কয়েকদিন ধরেই আলিপুরদুয়ারেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। মাঝে সোমবার জেলায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত মাত্র এক রোগীর সন্ধান মিলেছিল। কিন্তু মঙ্গলবার একলাফে সেই সংখ্যাটা বেড়ে হল ১১ জন। যাঁদের মধ্যে তিন ব্যাঙ্ককর্মী ও এনবিএসটিসির কর্মীরা ছাড়াও মাদারিহাট ব্লকের দুই গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরের কর্মীও রয়েছেন। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মূল শাখার তরফে জানানো হয়েছে, তিন কর্মী আক্রান্ত হওয়ায় ৩০ জুলাই পর্যন্ত তাদের ব্যাঙ্কের ওই শাখা বন্ধ থাকবে। এই সময়ের মধ্যে ব্যাঙ্কের শাখাটিতে স্যানিটাইজ় করা হবে।

Advertisement

তিন ব্যাঙ্ককর্মী করোনাতে আক্রান্ত হওয়ায় আলিপুরদুয়ার জেলার অন্যান্য বেশ কিছু ব্যাঙ্কের কর্মীদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে।’’ আলিপুরদুয়ার জেলার লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার প্রকাশ বড়ুয়া বলেন, ‘‘বিভিন্ন ব্যাঙ্কে মাঝেমধ্যেই প্রচুর গ্রাহকদের ভিড় হচ্ছে। সরকারি কোনও ভাতা দেওয়ার প্রশ্ন থাকলে সেই ভিড় আরও বেড়ে যায়। সেজন্য যেসব ব্যাঙ্কে ভিড় হচ্ছে সেখানে তা সামাল দিতে অন্তত সিভিক ভলান্টিয়ারের ব্যবস্থা করা উচিত। সেইসঙ্গে ব্যঙ্ককর্মীদের আরও বেশি করে করোনার পরীক্ষা করাও প্রয়োজন।’’

এরইমধ্যে ফালাকাটার একটি মদের দোকানের এক কর্মীর করোনা ধরা পড়ায় সেখানেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ট্রুন্যাট মেশিনে লালারসের নমুনা পরীক্ষায় ওই কর্মীর করোনা পজ়িটিভ আসে। তিনি সত্যিই করোনায় আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত করতে তাঁর লালারসের নমুনা শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারে বর্তমানে ৪০ জন রোগী কোভিড হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। সেফ হাউসে রয়েছেন ১৫ জন। সেখানে রোগীদের যাতে কোনও অসুবিধের মধ্যে পড়তে না হয়, সেদিকে নজর রাখছেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। কোচবিহারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও লালারস পরীক্ষার হার নিয়ে খুশি ছিলেন না বাসিন্দারা। এদিন থেকে র‌্যাপিড টেস্ট শুরু হওয়ায় খুশি অনেকেই।

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement