ফাইল চিত্র
বাসের টিকিটের জন্য শনিবার শিলিগুড়ির মাল্লাগুড়িতে পরিবহণ সংস্থার অফিসে এসে ঘুরছিলেন মহম্মদ রিটন এবং রাফেজা খাতুন। ঢাকায় যাবেন। দার্জিলিঙে মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন। নাতনি হয়েছে। তাই মেয়ের কাছে কিছুদিন কাটিয়ে দেশে ফিরবেন তাঁরা। শনিবার কাউন্টারে এসে জানতে পারলেন শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকেই করোনাভাইরাস সংক্রমণের জেরে ঢাকায় যাওয়ার সমস্ত বাস পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আপাতত ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত পরিষেবা মিলবে না। তারপরে কখন পরিষেবা চালু হবে তাও অনিশ্চিত। ফলে বিপাকে পড়েছেন ওই দম্পতি।
এই সমস্যার কথা জেনেই সফর সংক্ষিপ্ত করে শুক্রবার ফিরে গিয়েছেন জাহিদ হাসান, গোলাম আনোয়ার, মালেকা খাতুনরা। তাঁদের শনিবার ফেরার কথা ছিল। কিন্তু এ দিন থেকে ভারত-বাংলাদেশ বাস পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাবে জেনে শুক্রবারই তাঁরা ফিরে যান।
সরকারি নির্দেশ আসার পরে শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকেই ভারত-বাংলাদেশ বাস, ট্রেন পরিষেবা বন্ধ হয়েছে। উত্তরবঙ্গে ট্রেন পরিষেবা নেই। বাসের উপরেই নির্ভর। শিলিগুড়ি থেকে চ্যাংরাবান্ধা এবং শিলিগুড়ি থেকে ফুলবাড়ি হয়ে ঢাকা পর্যন্ত বাস পরিষেবা হয়েছে। সেটা বন্ধ হল করোনার জেরে। বিদেশিদের এদেশে আসার ভিসাও বাতিল। বিদেশি নাগরিকের আসা বন্ধ করে দেওয়ায় বাস পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শিলিগুড়ি থেকে দু’টি সংস্থার বাস পরিষেবা মেলে ঢাকা যাওয়ার। দুপুরে শিলিগুড়ি থেকে সীমান্তের এ পার পর্যন্ত বাস যায়। সীমান্তে গিয়ে ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে নথিপত্র দেখিয়ে ছাড়পত্র নিয়ে বিকেলের পরে ও পারে গিয়ে একই পরিবহণ সংস্থার ঢাকাগামী অন্য বাসে উঠতে হয় যাত্রীদের। টিকিট একবারেই শিলিগুড়ি থেকে কাটা থাকে।
শিলিগুড়ি থেকে চ্যাংরাবান্ধা সীমান্তে যে বাস যায় তা পরদিন সকালে বাংলাদেশ থেকে এদেশে আসা যাত্রীদের নিয়ে ফেরে। পরিবহণ সংস্থার কর্মকর্তা পার্থপ্রতীম সাহা বলেন, ‘‘ওপার থেকে বিদেশি পর্যটকদের আসা বন্ধ হওয়ায় বাসের যাত্রী মিলবে না। শুধু শিলিগুড়ি থেকে সীমান্তে বাস চালিয়ে লাভ নেই। তাই বাস বন্ধ করা হয়েছে।’’ যাঁরা বাংলাদেশে ফিরতে চান তাঁদের এখন নিজেদের উদ্যোগে সীমান্তে গিয়ে ওপার থেকে স্থানীয় কোনও বাস পরিষেবা বা গাড়ির ব্যবস্থা করতে হবে।
ব্যবসার ক্ষতি হলেও রোগ প্রতিরোধে এই ব্যবস্থা ঠিক আছে বলেই অনেকের মত। ভারত-বাংলাদেশ বাস পরিষেবা দেওয়া একটি সংস্থার কর্ণধার শুভ ঘোষ বলেন, ‘‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মতো বিষয় এড়াতে সীমান্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তকে আমরা সকলেই স্বাগত জানাই। বাংলাদেশ থেকে কেউ এখন এদেশে আসতে পারবেন না। যদিও এদেশ থেকে কেউ ওপারে যেতে পারেন। তবে একদিকের যাত্রীদের জন্য বাস চালানো খরচ সাপেক্ষ বলে আপাতত পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।’’