জনহীন: প্রায় ফাঁকা কোচবিহার স্টেশন। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
একে একাধিক ট্রেন বাতিল। তার উপর রাস্তায় টোটো, অটোর সংখ্যা আরও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা। দুইয়ের জেরে আজ, রবিবার ‘জনতা কার্ফু’র দিন পথে ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন ট্রেনযাত্রীদের অনেকেই।
যাত্রীদের পরিজনদের কথায়, করোনা উদ্বেগের জেরে এমনিতেই টোটো-অটোর সংখ্যা কমেছে। এবার বেশ কিছু ট্রেন বাতিল হচ্ছে। কিছু ট্রেন গন্তব্যে পৌঁছনোর আগে থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। সব মিলিয়েই উদ্বেগ বেড়েছে। রেলের আলিপুরদুয়ার সিনিয়র ডিসিএম অমরমোহন ঠাকুর জানান, ১২ জোড়া মেল, ফাস্ট প্যাসেঞ্জার বাতিল হয়েছে। কিছু ট্রেন দেরিতে ছাড়বে। কিছু লোকাল প্যাসেঞ্জার ট্রেন বাতিলের নির্দেশও এসেছে।
কিন্তু কোনও রকমে গন্তব্যে পৌঁছলেও বাস বা অন্য গাড়ি মিলবে কি? প্রশ্ন সকলেরই। রেল সূত্রের দাবি, ওই বিষয়টির জন্য রেলকে দায়ী করা ঠিক নয়। অন্যদিকে, এনবিএসটিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নিগমের বাস পরিষেবা জারি থাকছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের সংযোগের সঙ্গে নিউকোচবিহার স্টেশনের বাসও চালু থাকবে। এনবিএসটিসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর সন্দীপ দত্ত বলেন, “নিগমের সমস্ত পরিষেবাই স্বাভাবিক থাকবে।” তৃণমূল প্রভাবিত অটো ইউনিয়নের আলিপুরদুয়ারের এক নেতা বিশ্বজিৎ দত্ত বলেন, “করোনার জন্য এমনিতেই অটো কম রয়েছে।” তৃণমূল প্রভাবিত কোচবিহারের একটি টোটো সংগঠনের উপদেষ্টা অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, “এমনিতেই কিছুদিন ধরে সতর্কতার জন্য অনেকে বাড়িতেই থাকছেন।” তিনি জানান, কিছুদিন ধরে সতর্কতায় নিউ কোচবিহারে রেলের রেকের কাজও বন্ধ রেখেছে শ্রমিকেরা।
সব মিলিয়েই উদ্বেগ, ভোগান্তির আশঙ্কা থাকছেই। কোচবিহারের বাসিন্দা তপন সাহা বলেন, “আমার ছেলের রবিবার নিউ কোচবিহারে পৌঁছোনর কথা। ঠিকমতো পৌছতে পারবে কিনা বা স্টেশনে এলেও বাড়িতে আসার টোটো, অটো পাবে কিনা সবই ভাবাচ্ছে।” এমন উদ্বেগে অনেকেই। কোচবিহারের বাসিন্দা রাজা বৈদ বলেন, “আমার পরিচিত কয়েকজন রবিবার যাত্রা বাতিল করেছেন। তাছাড়া, স্টেশনে পৌঁছোনর পরে বাড়িতে ফেরার টোটো, অটো পাবে কিনা তাও ভাবাচ্ছে।”
দিনহাটার বাসিন্দা বিভুরঞ্জন সাহা বলেন, “আমার বিশেষ কাজে গুয়াহাটি যাওয়ার কথা ছিল রবিবার। যাতায়াতের সমস্যার আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে বাধ্য হয়েই টিকিট বাতিল করেছি।”
রাজ্যের অনগ্রসর কল্যাণ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা কোচবিহারের তৃণমূল জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ অবশ্য বলেন, “রাস্তায় যানবাহন স্বাভাবিক থাকার কথা।” বিজেপির কোচবিহার জেলা সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন,“মানুষ সচেতন,সবাই জনতা কার্ফুতে সাড়া দেবেন বলে আশা করছি।”