Coronavirus

মাস্ক-স্যানিটাইজ়ার দুই-ই তৈরি করে নিল স্কুল পড়ুয়ারা মিলে

শোভানগর হাইস্কুল আগেই ‘স্কুল শিশু মিত্র’ পুরস্কার আগেই পেয়েছিল। এ বছরও সেটি রাজ্য সরকারের শিক্ষা দফতরের অন্যতম সেরা যামিনী রায় পুরস্কার পায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২০ ০২:২৮
Share:

পড়ুয়াদের পরিয়ে দেওয়া হচ্ছে মাস্ক। নিজস্ব চিত্র

শোভানগর এ দোকান থেকে ও দোকান। সকাল থেকে হন্যে হয়ে ঘুরেও মালদহে মিলছে না হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার। মাস্ক বিক্রি হলেও তার দাম চড়েছে অনেকটাই। অথচ করোনা রোখার অন্যতম অস্ত্র হল এই দু’টিই। এ বার ঘরোয়া পদ্ধতিতে সেই মাস্ক আর স্যানিটাইজারই তৈরি করল মালদহের শোভানগর হাইস্কুলের ‘সায়েন্স ক্লাব’-এর ছাত্রছাত্রীরা। তাদের সহযোগিতা করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও রসায়ন বিভাগের শিক্ষকরা। এখানেই শেষ নয়। এ দিন এই স্কুলে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে আসা অন্য দু’টি স্কুলের পড়ুয়াদেরও সেগুলি বিলি করা হয়। এছাড়া সায়েন্স ক্লাবের পড়ুয়ারা স্কুলের আশপাশের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যেও করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতনতার প্রচার করে এ দিন।

Advertisement

শোভানগর হাইস্কুল আগেই ‘স্কুল শিশু মিত্র’ পুরস্কার আগেই পেয়েছিল। এ বছরও সেটি রাজ্য সরকারের শিক্ষা দফতরের অন্যতম সেরা যামিনী রায় পুরস্কার পায়। স্কুল সূত্রে খবর, এই স্কুলের নিজস্ব ‘সায়েন্স ক্লাব’ রয়েছে। সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ৩০ জন ছাত্র-ছাত্রী এই ক্লাবের সদস্য। মালদহ জেলা জুড়ে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের যখন আকাল চলছে, কোথাও কোথাও কালোবাজারিরও অভিযোগ উঠছে তখন স্কুলের এই ক্লাবের পড়ুয়ারা তৈরি করল মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার।

সায়েন্স ক্লাবের সদস্য জাকিরুল হক, রিয়া কর্মকার, নাসিফা খাতুন, স্নেহা কর্মকাররা জানায়, টিসু পেপার কেটে তাতে কাপড়ের অংশ জুড়ে তারা মাস্ক তৈরি করেছেন। এক একটি মাস্ক তৈরিতে খরচ পড়েছে মাত্র এক টাকা করে। আর স্কুলের রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষক দেবাশিস চক্রবর্তী ও অনিমেষ চক্রবর্তীর সহযোগিতা নিয়ে তৈরি করা হয় স্যানিটাইজ়ারও। দুই শিক্ষক জানান, ৭০ শতাংশ ইথাইল অ্যালকোহল, ২০ শতাংশ জল এবং ১০ শতাংশ অ্যালোভেরা জেল ও গোলাপজল মিশিয়ে সেটি তৈরি করা হয়েছে।

Advertisement

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই স্কুলে ব্লকের ভর্তিটারি ও খাসখোল হাইস্কুলের ১৮৩ জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর পরীক্ষার সিট পড়েছে। পাশাপাশি স্কুলেরই একাদশ শ্রেণির ২০০ জন ছাত্র-ছাত্রীও পরীক্ষা দিচ্ছে। এ দিন সকাল ন’টা থেকে স্কুলের গেটের সামনে পরীক্ষা দিতে আসা উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্র-ছাত্রীদের স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোওয়ানো হয় এবং একটি করে মাস্ক দেওয়া হয়। কাউকে কাউকে মাস্ক পরিয়েও দেওয়া হয়। একই ভাবে বেলা দেড়টা থেকে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষার্থীদেরও হাত ধোওয়ানো হয়, বিলি হয় মাস্কও।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক হরিস্বামী দাস বলেন, ‘‘সাবধান থাকতে মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাত বারবার ধুতে হবে। কিন্তু এই দু’টোই বাজারে প্রায় অমিল। তাই স্কুলেই পড়ুয়ারা সেগুলো তৈরি করল।’’ স্কুলের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ইংরেজবাজার ব্লকের বিডিও সৌগত চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘শোভানগর হাইস্কুলের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement