ফাইল চিত্র।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে পলাতক মোর্চা নেতা বিমল গুরুংয়ের ঘনিষ্ঠ পাঁচ জনের অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট। এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই ইউএপিএ-তে মামলা চলছিল। বুধবার দুপুরে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের ডিভিশন বেঞ্চ ওই আদেশ দিয়েছে। অভিযুক্তরা তিন মাসের জন্য জামিন পেয়েছেন। ২০১৮ সালে দার্জিলিঙের বাদামতাম থেকে জিলেটিন স্টিক উদ্ধার এবং একাধিক দেশদ্রোহিতার মামলায় এই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে তাঁরা দার্জিলিং সংশোধনাগারে বন্দি। আগে এক দফায় হাইকোর্ট এবং আরেক দফায় জেলা আদলাতে আবেদন করেও অভিযুক্তেরা জামিন পাননি। সম্প্রতি করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে রাজ্যের বহু সংশোধনাগার থেকে বন্দিদের প্যারোলে মুক্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। যে ইউএপিএ-তে এদের বিরুদ্ধে মামলা চলছিল, সেই নিয়েই সুপ্রিম কোর্টে বিমল গুরুং-র পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে আবেদন করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ওই ধারায় মামলার তদন্ত করে কেন্দ্রীয় সংস্থা এনআইএ, রাজ্য পুলিশ নয়। মামলাটি এখনও বিচারাধীন।
২০১৭ সালে জুন মাসে পাহাড়ে রক্তক্ষয়ী আন্দোলন শুরু হয়। সেই আন্দোলনের সূত্র ধরেই ২০১৮ সালের অগস্টে বাদামতাম থেকে পূরণ তামাং, শেখর রাই, বিশাল তামাং, ভাস্কর রাই এবং সফল লামা গ্রেফতার হন। তাঁদের বাড়ি থেকে প্রচুর পরিমাণে জিলেটিন স্টিক উদ্ধার হয় বলে পুলিশ জানায়।
অভিযুক্তদের পক্ষে আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার, অভ্রজ্যোতি দাস এবং রিগেন লামা আদালতে জানান, অভিযুক্তরা দেড় বছরের বেশি বন্দি। ওই মামলায় সহ-অভিযুক্তরা মুক্ত রয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টেও মামলাটি বিচারধীন। এখন করোনা পরিস্থিতিতে তাই ওঁদের স্বাস্থ্যের কথা মাথা রাখাও জরুরি।
ডিভিশন বেঞ্চ জামিন মঞ্জুর করে জানায়, সুপ্রিম কোর্টের মামলার আদেশ, অভিযুক্তদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে অভিযুক্তদের ব্যক্তিগত জামিনের বন্ড দার্জিলিঙের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে দাখিল করতে হবে। অভিযুক্তরা মামলার প্রমাণ নষ্ট বা সাক্ষীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা যাতে না করেন, সে জন্য সাবধান করা হয়েছে। জামিন পেয়েই তাঁদের মেডিক্যাল টেস্ট করে দার্জিলিঙের বাড়িতে ঢুকে পড়তে হবে। স্থানীয় থানার ওসির নির্দেশ বা অনুমতি ছাড়া কোথাও যেতে পারবেন না, সেটাও সুনিশ্চিত করতে হবে।