কোচবিহার সরকারি মেডিক্যাল কলেজ।—ফাইল চিত্র।
ভিনরাজ্য থেকে ফেরা এ রাজ্যের বাসিন্দাদের সদা সতর্ক করছে প্রশাসন। খোঁজ পেলেই স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে কোয়রান্টিনে। অথচ সবকিছু জেনেও করোনা সংক্রমণের ‘রেড জোন’ মুম্বই থেকে এক ক্যানসার আক্রান্ত রোগিণী ও তাঁর পরিবারকে নিয়ে উদ্বেগজনক উদাসীনতাই দেখালেন দুই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যদিও শেষপর্যন্ত ওই রোগীদের কোয়রান্টিনে রাখার ব্যবস্থা করেন কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তার আগেই কোনওরকম পরীক্ষা ছাড়াই ওই পরিবারকে মুম্বই থেকে নিয়ে আসা অ্যাম্বুল্যান্স চালক হাওয়া।
মেখলিগঞ্জ হাসপাতাল থেকে কোচবিহার সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে ঘুরে বেড়ালেন ওই রোগিণীর আত্মীয়েরা। রোগিণীটিকে অবশ্য ভর্তি করিয়ে নেওয়া হয়। শেষপর্যন্ত অনেক অভিযোগ হওয়ার পরে কোয়রান্টিনে রাখা হয় তাঁর পরিজনদের। অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে চালক অবশ্য বেরিয়ে যান মহারাষ্ট্রের পথে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের নেতা পরেশ অধিকারী। তিনি সোমবার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মাঠে নেমে করোনাভাইরাসে যাতে কেউ আক্রান্ত না হন, সেই চেষ্টা করছেন। সেখানে এমন গাফিলতি মেনে নেওয়া যায় না।” কোচবিহারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে ওই ব্যক্তিদের কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে।”
মেখলিগঞ্জের এক গৃহবধূ ক্যানসারে আক্রান্ত। লকডাউনের আগে তাঁকে নিয়ে তাঁর পরিবারে চিকিৎসার জন্য মুম্বই যান। সেখানে চিকিৎসায় তেমন কাজ না হওয়ায় রোগী নিয়ে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। ৯০ হাজার টাকায় অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে রবিবার ৯টা নাগাদ তাঁরা মেখলিগঞ্জে পৌঁছন।
ওদিকে, ভাড়া পেয়ে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে চালক ও তাঁর সঙ্গী বেরিয়ে যান। এই অবস্থায় রাতভর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনেই থেকে যান ওই রোগিণীর আত্মীয়েরা। বারবার যেখানে ভিনরাজ্য থেকে আসা মানুষজন নিয়ে সতর্ক করছে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা, সেখানে এমন ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
পরেশ বলেন, “বিষয়টি রাজ্য সরকারের কাছে জানানো হবে। এমন অসতর্ক হলে জেলা করোনা-গ্রাস থেকে মুক্ত হবে না, এটা সবার ভাবা উচিত।”