প্রতীকী ছবি।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় ভারত-নেপাল সীমান্তে দার্জিলিং জেলার ৩৫টি গ্রামকে স্পর্শকাতর চিহ্নিত করা হয়েছে। সীমান্ত পেরিয়ে নেপালে যাঁরা যাতায়াত করেন, তাঁদের কারও রোগের উপসর্গ দেখা যাচ্ছে কি না— নজরদারি করতে স্বাস্থ্যকর্মীদের নামানো হয়েছে গ্রামগুলিতে। গ্রামে গিয়ে লোক জড়ো করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে তাঁরা বাসিন্দাদের বোঝাচ্ছেন। কখনও খোঁজ নিচ্ছেন, গ্রামের কে কবে নেপাল গিয়েছে বা নেপাল থেকে এসেছে। খোঁজ পেলে সেই বাড়িতে গিয়ে তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করে তথ্য নথিভুক্ত করছেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে তাদের কাজকর্মও ঠিকমতো হচ্ছে কি না, নজর রাখা হচ্ছে।
চিনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের জেরে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। নেপালেও আক্রান্ত মিলেছে। সে কারণে ভারত-নেপাল সীমান্তে কয়েক সপ্তাহ আগেই লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পশুপতি, ওকাইটি সীমানা, পানিট্যাঙ্কিতে ‘হেল্থ চেকপোস্ট’ করে নেপাল থেকে যাঁরা এ দিকে আসছেন, তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে তাতেও নিশ্চিত হতে পারছে না স্বাস্থ্য দফতর। ভারত-নেপাল মৈত্রী চুক্তির কারণে সীমান্ত পেরিয়ে আনায়াসে যাতায়াত করতে পারেন দুই দেশের মানুষ। সীমান্তের গ্রামগুলি থেকে অনেকেই নেপালে কাজ করতে যান। নেপালের অনেকে চিকিৎসা এবং অন্য নানা প্রয়োজনে এ দিকে আসেন। তাই গ্রামে গ্রামে খোঁজখবর করা জরুরি বলে মনে করছে স্বাস্থ্য দফতর। জেলায় করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ কাজের দায়িত্বে থাকা নোডাল অফিসার তথা উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তুলসী প্রামাণিকের নেতৃত্বে এদিন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা খড়িবাড়ি, নকশালবাড়ি এলাকায় নেপাল সীমান্তের ছয়টি গ্রাম ঘুরে স্বাস্থ্য কর্মীদের কাজ পরিদর্শন করেন।
উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-২ বলেন, ‘‘গ্রামস্তরে শিবির করে নজরদারি করা হচ্ছে। কারও মাধ্যমে কোনও ভাবে যাতে সংক্রমণের আশঙ্কা যাতে না থাকে, তার জন্যই এই নজরদারি।’’ প্যারামেডিক্যাল কর্মীদের নিয়ে গ্রামগুলিতে নজরদারি করা হচ্ছে। তাতে নার্স, আইসিডিএস কর্মী, অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মীরাও রয়েছেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ কারও রয়েছে— এই ধরনের কিছু নজরে এলে তারা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের জানাবেন। সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের সম্ভবনায় ৩৫টি গ্রাম স্পর্শকাতর হিসাবে চিহ্নিত করা হলেও তার মধ্যে কয়েকটি ‘ভালনারেবল’ এলাকাও রয়েছে। যেমন সীমান্তের গ্রাম ডাঙুয়াজোত। এটির তিন দিকে বিহার, নেপাল ও বাংলা। এখান থেকে প্রচুর শ্রমিক নেপালে কাজে যান। তেমনই দুলালজোত, ওকাইটি চা বাগান কলোনি, শেকিয়ার মতো গ্রামগুলিতেও নজরদারি জরুরি হয়ে পড়েছে, জানানো হয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে।